পরপর ৩ দিন আমাদের গ্রুপে আলোচনার পর-চতুর্থ দিনে এসে আমরা তার ধারাবাহিকতায় ওয়ার্কশপ এর আয়োজন করেছি ।
আমাদের আজকের ওয়ার্কশপের বিষয় ছিলোঃ দ্রুত পড়ার টিপস অ্যান্ড ট্রিক্স ।
আজকের আলোচনার মুল টার্গেটই ছিলো কিভাবে আমরা যে কোন বই খুব দ্রুত পড়তে পারবো ।
যে সকল পয়েন্ট আজকের আলোচনায় তুলে ধরা হয়েছে, সেগুলো হলঃ
১. সময় নির্ধারণ আর উপযুক্ত পরিবেশঃ দৈনিক ঠিক কতক্ষন পড়বেন, তা নির্ধারণ করাটা জরুরী । আধা ঘন্টা, ১ ঘন্টা যাই হোক । আপনার নিজস্ব ক্যাপাবিলিটি অনুযায়ী সেই সময় নির্ধারণ করতে হবে । আর আপনার নির্ধারিত সময় এর শেষ সময় একটা বিরতির সময় রাখবেন , যেটা আপনাকে রিল্যাক্স থাকতে সাহায্য করবে । আর সেই সাথে পড়ার জায়গাটাও বেশ গুরুত্বপুর্ণ । আলোবাতাস পূর্ণ, নীরব, কোলাহল মুক্ত, খোলামেলা রুমে পড়তে পারলে বেশ ভালো হয় ।
২. শান্তমনে পড়তে বসাঃ বিক্ষিপ্ত মন নিয়ে পড়তে বসা যাবে না । পড়তে বসার আগে নিজেকে অবশ্যই রিল্যাক্স থাকতে হবে । শারীরিক দুর্বলতা নিয়েও পড়তে বসার প্রয়োজন নেই । ক্ষুধা থাকা অবস্থায়ও পড়তে বসার প্রয়োজন নেই । পড়ার আগে হালকা হাটাহাটি বা ব্যায়াম করা ভালো হয়, এতে করে মস্তিস্কে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় , যাতে করে পড়ায় মনঃসংযোগ করতেও সুবিধা হয়, সেই সাথে মনে রাখতেও ।
৩. চোখ বুলিয়ে পড়াঃ শব্দ করে পড়লে আপনার মনে রাখার ব্যাপারটা হয়তো ভালো কাজ করে, কিন্তু গবেষণা বলে মনে মনে পড়লে পড়ার গতিও বাড়ে, পাশাপাশি মনে রাখাও সহজ হয় ।
তবে ব্যক্তিভেদে তার হেরফের হতে পারে ।
৪. সাব ভোকালাইজেশনঃ আমাদের পড়ার পাশাপাশি ইমাজিনেশন পাওয়ারও কাজে লাগাতে হবে । নিজের কল্পনায় তার একটা ছবি তৈরী করে নিতে হবে । পুর্বে জানা কিছুর সাথে নতুন কিছু যদি সংযোগ স্থাপন করতে পারেন, তাহলে তা পড়তে আর মনে রাখতে সুবিধা হয় ।
৫। বইয়ের লাইনের প্রতি মনযোগ দেয়াঃ আপনি যখন পড়বেন, তখন পয়েন্টার ব্যবহার করে পড়তে পারলে ভালো হয় । এতে করে মনযোগ অন্যদিকে যাবে না । হতে পারে সেটা কলম, হাই লাইটার, পেন্সিল যেকোন কিছু । এতে করে আপনি একটা নির্দিস্ট দিকে ফোকাস করতে পারবেন ।
৬. কমফোর্ট জোন থেকে বেড়িয়ে আসাঃ নিজেকে একটু ফোর্স করতে হবে । নিজে নিজে একটু সময় বাড়াতে হবে । প্রতিদিন একটু একটু করে সময় বাড়াতে পারলে, এফেক্টিভ রিডিং এর সময় দিন দিন বৃদ্ধি পাবে ।
৭. একটিভ রিডিংঃ একটা প্যারার সব কিছুই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ না । তাই, প্যারার গুরুত্বপূর্ন লাইনগুলোতেই মনযোগ দিতে হবে । অপ্রয়োজনীয় লাইঙ্গুলো খুব ভালোভাবে মনযোগ দিয়ে পড়ার দরকার নেই ।
৮। রিডিং স্পিড কাউন্টঃ এক পাতা বাংলা / ইংরেজী লেখা পড়তে আপনার কতক্ষন সময় লাগে ? সেটা একটু জানতে হবে ।
ধীরে ধীরে চর্চার মাধ্যমে সেই সময় বাড়াতে হবে ।
৯. যে কোন পরিস্থিতিতে সামনে কিছু পড়ার কোন কিছু পেলে পড়তে হবে । ম্যাগাজিন, পেপার, বই যে কোন কিছু । লেখার ভাবভঙ্গী বোঝার চেস্টা করেন । এমনকি রাস্তায় চলার সময় আশেপাশের দোকান এর সাইনবোর্ড ও এক্ষেত্রে পড়া যেতে পারে ।
১০. পড়ার সময় সম্পুর্ণ মনযোগ দিয়ে পড়তে হবে , পড়ার পাশাপাশি অন্য কোন দিকে মনযোগ দেয়া যাবে না । পড়ার পাশাপাশি নিজের ইমাজিনেশন কেও কাজে লাগাতে হবে । এতে করে মনঃসংযোগ করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় ।
১১. নিজের পড়া অংশটা নিয়ে পরিচিত কারোও সাথে আলোচনা করতে পারেন । এতে করে তা মনে রাখতে সুবিধা হবে । নিজেরও একটা চর্চা হয়ে যাবে ।
এগুলোই ছিলো আমাদের ওয়ার্কশপের মুল আলোচনার বিষয়বস্তু । এসবই তো আমার পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে লেখা । াশাকরি, নিয়মকরে এই বিষয়গুলো চর্চা করতে পারলে, দ্রুত পড়ার ক্ষমতা খুব সহজেই অর্জন করা সম্ভব হবে ।
এই বিষয়গুলো অন্তত এক সপ্তাহ সবাইকে প্র্যাকটিস করতে হবে । আশাকরি, এরমধ্যেই ধীরে ধীরে নিজেই নিজের অগ্রগতি বুঝতে পারবেন ।
সবাইকে বেশী বেশী করে বই পড়ার আহবান রইলো ।