দ্রুত পড়ার টিপস বলতে আমাদের নিয়মিত কিছু অভ্যাস চর্চা করে যেতে হবে।

Anne Jones, six time World Speed Reading Championship winner উনি ৩০ মিনিটে একটা বই পড়ে শেষ করতে পারেন আমরা হয়ত অত পড়তে পারব না কিন্তু কিছু উপায় ফলো করলে নিজেদের পড়ার হার উন্নত করতে পারব বলে বিশ্বাস করি ।

১।  কত ঘন্টা পড়বেন

সবার মেধা বা মস্তিস্কের ধারন ক্ষমতা এক নয়। সবার আকাঙ্খাও এক নয়। আবার অনেকের পড়া তাড়াতাড়ি মুখস্ত হয়, অনেকের দেরিতে। তাই যতটুকুই পড়া হোক না কেন, তা অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়া উচিত। এ বিষয়টা পুরোটাই আপনার উপর নির্ভর করছে। আপনি চাইলে ১ ঘন্টার পড়া ৩ ঘন্টা ধরেও পড়তে পারেন। তবে পড়াশুনার মধ্যে একটা ধারাবাহিকতা থাকা উচিত। আজকে পাঁচ ঘন্টা পড়লেন আর পরের দিন একদম পড়লেন ই না এমনটা করা ঠিক না। তাই পড়াশুনায় নিয়মিত ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করবেন। আপনি যদি কম পড়েন

২। ক্লান্ত লাগলে পড়বেন না

মন শান্ত আছে কিনা, দুর্বল লাগছে কিনা ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো:-বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেইন যে কোনইনফরমেশন বা তথ্যকে মেমরি বা স্মৃতিতে পরিণত করে ঘুমানোর সময়। তাই পড়া মনে রাখার জন্য পড়ালেখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোও জরুরি। সাধারণত একজন সুস্থ ব্যক্তির দিনে ৮ ঘন্টার মত ঘুমানো উচিত। এর থেকে কম ঘুমালে পড়া মনে রাখার ক্ষমতা কমে যায়। এর পাশাপাশি খিদে পেটে মনোযোগ থাকে না তাই পড়াও হয় না, তাই হালকা খাবার খেয়ে পড়তে বসা উচিত, আবার পেট পুরে খেয়ে পড়তে বসলে ঘুম চলে আসবে।

৩। পড়তে বসার আগে ১০ মিনিট হাঁটা

পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে ১০ মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, পড়ার পূর্বে ১০ মিনিটহাঁটলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা প্রায় ১০ শতাংশ পরিমাণ বেড়ে যায়। তাহলে একটু হাঁটা পরেই শুরু হোক পড়ালেখা।

৪। মনে মনে পড়ার চেষ্টা করুন।

শব্দ করে পড়ার চেয়ে মনে মনে পড়ার অনেক দ্রুত আগায় অনেক মানুষকেই দেখা যায় তারা যে কোন পড়া জোরে জোরে পড়ে কিন্তু আসলে মনে মনে পড়লেই পড়া বেশী মনে থাকে এবং দ্রুত পড়া যায়। কারন আপনি যখন মনে মনে পড়েন তখন পড়াটা বুঝে পড়েন। তাই মনে মনে পড়ার সময় ও জোরে জোরে পড়ার সময়  নির্দিষ্ট সময়ে আপনি কয়টা শব্দ পড়তে পারছেন তা তুলনা করে নিজেই দেখতে পারেন আপনার জন্য কোনটা বেশী কাজে দেয়।

৫। সাব ভোকালাইজেসন ও ইমাজিনেসন

মনে মনে পড়ূন ও ইমাজিনেশন কে কাজে লাগান,  যখন আমরা পড়ি , তখন মনে মনে একটা চিত্র আকার চেষ্টা করি জিনিসটা কি, দেখি দ্রুত, চিন্তা করি দ্রুত, কিন্তু আমরা কথা বলি আস্তে তাই এই তিনের সম্বনয় দরকার হয়, তাই যা পড়বে একটু চিন্তা করে পড়তে হবে , একটু কল্পনা করে পড়তে হবে,  ছোট বেলায় আমরা শব্দ করে পড়ি তখন আমাদের বোঝার লেভেল কম ছিল, কিন্তু আপনি বড় হবার পরেও যদি এমন করে পড়েন তাহলে আপনার পড়ার ক্যাপাবিলিটি বাড়বে না, তাই বুঝে পড়তে হবে ।

৬। ফোকাস অন বুকস লাইন

আঙ্গুল দিয়ে পড়াঃ ছোট বাচ্চাদের বেশিরভাগ মা-বাবা বা শিক্ষকরাই বলে থাকে আঙ্গুল দিয়ে পড়তে। কারন আপনি যখন একটা লাইন পড়ার সময় লাইনটার নিচে আঙ্গুল বা পেন্সিল বা একটা পয়েনটার   দিয়ে রাখবেন তখন আপনার মনযোগটা শুধু ওই লাইনেই থাকবে ফলে পড়ার গতি বৃদ্ধি পাবে এবং পড়া থেকে মনযোগও নষ্ট হবে না।

৭ ফোর্স করতে হবে নিজেকে

আমারা এতদিন যেভাবে পড়েছি তার চেয়ে দ্রুত পড়তে হলে ব্রেন কে একটু কমান্ড দিতে হবে নিজেকে একটু দ্রুত তাড়া দিতে হেবে পড়ার জন্য।

৮ একটিভ রিডিং

পড়ার সময় কন্টেন্ট এ চোখ বুলালে আপনি দেখতে পারবেন কোন জিনিসটা একটু গুরুতপূর্ণ, দরকার জিনিস একটু গ্রুতব দিয়ে পড়বেন, এতে হবে আপনি দ্রুত মোদ্দা কথা গুলি ধরতে পারবেন , মনে রাখতে পারবেন

৯। রিডিং স্পিড কাউন্ট

এখন পড়তে কত সময় লাগে, আর প্যাক্টিস করার পর কত সময় লাগছে, এই ভাবে প্রথম দিকে একটু কাউন্ট করার চেষ্টা করুন । একবার অভ্যাস হয়ে গেলে আর লাগবে না

১০। যে কোন পরিস্থিতি তে পড়ার অভ্যাস

যে কোন পরিস্থিতিতে সামনে কিছু পড়ার কোন কিছু পেলে পড়তে হবে । ম্যাগাজিন, পেপার, বই যে কোন কিছু । লেখার ভাবভঙ্গী বোঝার চেস্টা করেন  যেখানে যা পাবো মানে চোখের সামনে যা পাবো সাথে সাথে পড়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে ঐই লেখা দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে তা বুঝার চেষ্টা করতে হবে। এমনকি বাসে যেতে যেতে দোকানের নামের বানান গুলি পড়তে পারেন, এতে আর কিছু হোক না হোক আপনার বানান ভুল হবে না।

১১। মনোযোগ

আপনাকে পড়ার সময় সম্পুর্ণ মনযোগ দিয়ে পড়তে হবে। পড়তে বসে  অন্য কোন দিকে মনযোগ দেয়া যাবে না । পড়তে বসে ফোন নিতে কাজ করা, আড্ডা দেয়া, বার বার উঠা এসব না করলে পড়া আগাবে ও মনে রাখতে পারবেন।

১২। পড়ার পরে সম্ভব হলে অন্যের সাথে আলোচনা।

পড়া মনে রাখার জন্য প্রাচীনকাল থেকেই এ পদ্ধতিটি বেশ জনপ্রিয়। নিজে যা পড়েছি বা জেনেছি তা অন্যকে শেখানোর মাধ্যমে মস্তিষ্কে আরো ভালোভাবে গেঁথে যায়। তাছাড়া অন্যকে শেখানোর ফলে নিজের দক্ষতা প্রকাশ পায় এবং পড়াটি ভালভাবে আয়ত্ত হয়েছে কিনা তাও বুঝা যায়।