আন্তর্জাতিক নারী দিবস যার পুর্ব নাম ছিল আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস এখন আমরা পালন করি প্রতি বছর ৮ মার্চ তারিখে । একটি লক্ষ্যে সারা বিশ্বব্যাপী এই দিবস উদযাপন করে থাকেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নারীদিবস উদযাপনের লক্ষ্য বিভিন্ন প্রকার হয়। কোথাও নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান ও শ্রদ্ধা উদযাপনের মুখ্য বিষয় হয়, আবার কোথাও মহিলাদের আর্থিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক কধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় ।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০১৯ এর থিম “সমানভাবে চিন্তা করুন, স্মার্ট বিকাশ করুন, পরিবর্তনের জন্য উদ্ভাবন করুন”।
থিমটি এভাবে উদ্ভাবনী উপায় ফোকাস করবে, যেখানে আমরা লিঙ্গ সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রসর হতে পারি, বিশেষত সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা, জনসাধারণের পরিষেবাগুলিতে এবং টেকসই অবকাঠামোগুলিতে আমাদের নারী অধিকার নিশ্চিত করতে হবে ।
সাস্টেনেইনবল ডেভলপমেন্ট গোল (এসডিজি) অর্জনের জন্য আমাদের সমন্বিত পন্থা এবং নতুন সমাধান দরকার, বিশেষত যখন লিঙ্গ সমতা বাড়াতে এবং সমস্ত নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন কার্যকারী রূপান্তর আনতে হবে।
কিভাবে এল নারী দিবস ।
এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা। সেই মিছিলে চলে সরকার লেঠেল বাহিনীর দমন-পীড়ন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হলো। ক্লারা ছিলেন জার্মান রাজনীতিবিদ; জার্মান কমিউনিস্ট পার্টির স্থপতিদের একজন। এরপর ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয়ঃ ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে এগিয়ে আসে বিভিন্ন দেশের সমাজতন্ত্রীরা। ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগল। বাংলাদেশেও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতার লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করার অভীপ্সা নিয়ে।