আর্নল্ড সোয়ার্জনেগার / Arnold Schwarzenegger  একজন  শক্তিমান অভিনেতা!

সম্প্রতি প্রকাশ হওয়া তার ৩৮সেকেন্ডের এক ভিডিও তে কিছু কথা ছিল এরকমঃ “তারা বলে, একটা ম্যাজিক পিল আছে যা খেলে আপনি রাতারাতি হারকিউলিস এর মত বড় আর শক্তিশালী হবেন। তারা বলে, একটা ম্যজিক পিল আছে যা খেলে আপনি বিশ্বের বিখ্যাত অভিনেতা হবেন। এবং সেই ম্যজিক পিল আপনাকে সুপার হিউম্যান হবেন। সব সুখের অধিকারী হবেন।” আমি বলি, ” আসলে কোন শর্টকাট নেই।
আপনার প্যাশন থাকতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে আপনাকে হার্ড অয়ার্ক করতে হবে।

আর্নল্ড সোয়ার্জনেগার, যদি জীবনে কিছু করে দেখাতে চান তবে তাদের জন্য আমার পাচ নীতি যেগুলো র মাধ্যমে আমি আমার জীবন কে বদলেছি।

প্রথম নীতি  বা নীতি হলো-
আপনার লক্ষ্য স্থির করুন- আপনার যদি লক্ষ্য না থাকে, আপনার যদি গোল না থাকে তাহলে আপনি দ্বিধায় পড়ে যাবেন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর অস্ট্রিয়া তে বেশ বড় রকমের নাড়া পড়ে যায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ টিতে অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল ভয়ানক খারাপ। আর্নল্ড চাইতেন, কোন ভাবে অস্ট্রেয়া থেকে বের হতে চাইতেন। একদিন স্কুলে আমেরিকা নিয়ে ডকুমেন্টারি দেখবার পর তিনি স্থির করলেন,এই সেই জায়গা যেখানে তিনি যেতে চান। কিন্তু কিভাবে? আমেরিকা য় পাড়ি দেবার মত অর্থকড়ি তাদের কারুর ই ছিল না। এর মধ্যে একদিন বডি বিল্ডিং ম্যাগাজিন ঘাটতে গিয়ে তিনি দেখলেন, এরকম একটা হেডিং – মাস্কুলার ম্যান হলেন হারকিউলিস স্টার। যার নাম হল রেজ পার্ক। রেজ পার্ক ইংল্যান্ডের লিডসে জন্ম নেন। গরীব, অসহায় এক ঘরে।। পাচ ঘন্টা, দৈনিক পাচ ঘন্টা ট্রেনিং চালাতে লাগলেন তিনি। রেজ পার্ক প্রতিদিন সাধনা করতে করতে একদিন নিজেকে সেই যোগ্য করে তুললেন- মিঃ গ্রেট ব্রিটেন। এরপর মিঃ ইউনিভার্স। তিন তিনবারের মিঃইউনিভার্স এরপর জনপ্রিয় হারকিউলিস মুভির লিড ক্যারেক্টার এ নিজের নাম লেখালেন। সেই ম্যাগাজিন আর্নল্ডের জীবন বদলে দেয় অনেক খানি। তখন থেকেই তিনি ঠিক করেন, যত স্ট্রাগল করা লাগুক, যত পরিশ্রম করা লাগুক- এগূলো কোন ব্যাপার ই না। কারন তিনি তার লক্ষ্য স্থির করেছিলেন এবং সেটি বাস্তবায়নে যা যা করা লাগে, সে অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছিলেন।

২য় নীতি যা আর্নল্ড সোয়ার্জনেগার বিশ্বাস করতেন-
কখনও ই ক্ষুদ্র চিন্তা করবেন না। সব সময় বড় চিন্তা করবেন। তিনি চাইতেন স্টার হতে। তিনি চাইতেন হাইয়েস্ট পেইড এন্টারটেইনার হতে। তিনি চাইতেন বিখ্যাত হতে।বড় চিন্তাই তাকে বড় জায়গায় এনে দিয়েছে।

৩য় নীতি  – যারা না বলে তাদের ইগ্নোর করুন। আপনি যখন বড় চিন্তা করবেন,আপনি যখন বড় কিছু ভাববেন তখুনি আপনার আশেপাশের মানুষ আপনাকে বলবে যে এটা অসম্ভব। আর্নল্ড যখন পনের বছরে বডি বিল্ডিং করতেন তখুনি বলতেন, আমি চাই মিঃইউনিভার্স হতে। উনি ১৩টি চ্যাম্পিয়ন শীপ জিতবার পর যখন বলতেন আমি চাই রেজ পার্ক হতে,আমি চাই মুভি স্টার হতে,তখন এজেন্ট বা সিনেমার ম্যানেজার রা তাকে নিয়ে হাসাহাসি করত। তাকে ক্রেজি বলত। তার উচ্চারন নিয়ে, তার নাম নিয়ে তার শরীর তার হাইট নিয়ে হাসাহাসি করত এবং তাকে না বলত।আর্নল্ড কারু কথায় পাত্তা দেন নি, তিনি এক্টিং ক্লাস, উচ্চারন ক্লাস সহ নিজেকে সব খানে সপে দিয়েছেন। হুট করেই টিভি শোর ছোট একটি পার্ট, তারপর আবার তারপর আবার। এরপর বড় রোলে তার ডাক আসল। Conan the Barbarian.

এরপর জেমস ক্যমেরুন প্রেস কনফারেন্সে টার্মিনেটর নিয়ে বললেন, হিস্টরি তে যে কয়টি ডায়লগ বিখ্যাত হয়েছে, তার মধ্যে টার্মিনেটর এর I’ll be back অন্যতম। এটি বিখ্যাত হয়েছে কারন আর্নল্ড সোয়ার্জনেগার এর ক্রেজি উচ্চারণ এর জন্যই।। কারন এটি শুনতে পুরোই মেশিনের মত লাগছিল। যেখানে তার উচ্চারন নিয়ে মানুষ হাসাহাসি করেছিল, সেটিকে তিনি নিয়ে গেছেন হিস্ট্রি ক্রিয়েশনের যায়গা তে। তার পরামর্শ হচ্ছে, না যারা বলে তাদের ইগ্নোর করুন।

৪র্থ নীতি হল, যত যাই হোক,কঠোর পরিস্রম করুন। আর্নল্ড সোয়ার্জনেগার কে এক্টিং ক্লাস করতে হত, বিজনেস কন্সট্রাকশান এর কাজ করতে হত চলার জন্যে, কলেজ যেতে হত। পাচ ঘন্টা জিমে সময় দিতে হত।। ফেইলর হবার ভয় তাকে তাড়া করে বেড়াত। সে জন্য তিনি পরিশ্রম করে যেতেন। কাজ কাজ আর কাজ।।

পঞ্চম নীতি বা রুল –
শুধুই গ্রহন করা নয়,দেবার অভ্যাস করুন। আপনি বিখ্যাত, আপনি ক্ষমতার শীর্ষে আছেন- যদি মানুষ কে সাহায্য ই না করেন তবে সব বৃথা। আপনি যদি সাহায্যের হাত না বাড়ান তবে আপনার খ্যাতি প্রতিপত্তির কি মানে?

দুনিয়াকে বদলাবার জন্য এখুনি সময়।”