সান্ধ্য আড্ডা প্রথমবারের মত আত্মপ্রকাশ করলো আমাদের জনপ্রিয় সপিবুকস এর প্রকাশিত ম্যাগাজিন । যাতে স্থান পেয়েছে এই গ্রুপেরই সদস্যদের লেখা । এছাড়াও গ্রুপের সদস্যদের নানা সময়ে তোলা বই সম্পর্কিত ছবিও এতে স্থান পেয়েছে । চলুন ম্যাগাজিন সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জানি ।


সান্ধ্য আড্ডা ম্যাগাজিন রিভিউ:

পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৫০
প্রকাশঃ জানুয়ারী, ২০১৯

বিস্তারিতঃ ২০১৯ সালে পড়া আমার প্রথম বই, গল্প কবিতা যাই বলেন না কেন, এখানে সব আছে।

ভুমিকাতেই রাজিব ভাই এর লেখা, আপনাকে কিছুটা হলেও অনুপ্রাণিত করবেই৷ এই ম্যাগাজিন বের হওয়ার, উদ্দেশ্য কারণ, এর উপকার সব কিছুই তিনি বলেছেন।
ছড়া, কবিতা, সাহিত্য আলোচনা, অনুপ্রেরণামূলক রচনা, গল্প এবং সবশেষে বুক ফটোগ্রাফি, এই বিষয়গুলোই স্থান পেয়েছে ম্যাগাজিনটিতে।

ছড়াঃ
মোট ৪ জন এর ছড়া স্থান পেয়েছে সান্ধ্য আড্ডা ম্যাগাজিন এ। পড়ে বুঝতে পারবেন না, এদের ছড়াকার হওয়ার বয়স কতদিন হল, বাজি ধরে বলতে পারি৷ খুব ভালো লেগেছে৷ সাথী ইসতেকার এর লেখা ছড়া টা পড়ে একটু বেশী অবাক হয়েছি। কারন, মাত্র ৪/৫ মিনিট এ কিভাবে এমন একটা ছড়া লেখা যায়, আমার বোধগম্য নয়৷ অনেক ভালো লেগেছে। বাকি ছড়াগুলোও মান সম্মত।

কবিতাঃ
আমার মতে দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজ কবিতা লেখা৷ ১৩ জন কবি একটা ছায়ার নীচে আছে, ভাবতে পারেন এই একত্বতার শক্তি? শায়লা আক্তার আমার অলটাইম ফেভারিট কবি। এবার তো আরোও বড় হল তালিকা। নাজমুন্নাহার খালেদা, নুসরাত জাহান মিতু, মর্জিনা শিবলী, মরিয়ম আহমেদ, মো আরিফ হোসেন, শাবানা পারভীন, তামান্না তাসনিম, মুনিমা মান্নান, সোহাগ তায়িন, আয়শা সিদ্দিকা আপনাদের কথা আলাদা ভাবে না বললেই নয় ৷ আপনাদের প্রতি আমাদের বিশেষ অনুরোধ থাকবে, অন্তত ১০ টা করে কবিতা লিখে প্রস্তুত থাকুন৷ শুধুমাত্র আপনাদের কবিতা দিয়েই একটা বই বের করা সম্ভব৷ আমি কবিতা পড়ি আজ প্রায় ১৬ বছর৷ অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি৷ লেগে থাকুন, দারুণ করবেন আপনারা৷ পরের বার থেকে এডিটর আমি, তাই সাবধান, ভালো না হলে ছাপাবো না কিন্তু৷ লেখায় উন্নতি দেখতে চাই আরোও।

সাহিত্য আলোচনাঃ
সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করার যোগ্যতা আমার একদমই নেই। তাই যারা এই ডিপার্টমেন্ট এ লিখেছেন, সকলকেই স্যালুট। জাহাঙ্গীর আলম নাসের ভাই এর ফ্যান হয়ে গেলাম আজ থেকে। নীলুফা আফরোজ বীথি, নাজমুন নাহার নুপুর ও বেশ ভালো লিখেছেন৷

অনুপ্রেরণামুলক রচনাঃ
রাজিব আহমেদ মানুষটাই যেখানে একজন জলজ্যান্ত অনুপ্রেরণার উৎস, সেখানে তার লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত না হয়ে পারবেন না। তার এই অনুবাদ, আমাদের যে কোন পাঠ্যপুস্তক এর পরিচ্ছেদ হওয়ার যোগ্যতা রাখে৷ স্পেশাল ভাবে তাই রাজীব ভাইয়া কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে কৃতজ্ঞতা, এত সুন্দর একটা লেখা উপহার দেয়ার জন্য। বই পড়া নিয়ে দুইজন লিখেছেন একজন মিফতাউল জান্নাতী সিনথিয়া, আরেকজন হাসান মোহাম্মদ আল আমিন। আমার লেখাটাই তিনবার পড়লাম, ভাবলাম আরোও ভালো ভাবে লেখা যেত। আরোও সহজ ভাবে লেখা যেত। আরোও সাবলীল।
সিনথিয়া আপুর লেখাও চমতকার হয়েছে৷ জাকিয়া কবির জিনিয়া আপুও বেশ ভালো লিখেছেন। কিন্তু কেমন যেন সংক্ষিপ্ত মনে হয়েছে আমার।

গল্পঃ
গল্পগুলো একদম নাটকের মত, যেন সামনে দেখতে পারছি। আপনাদের গল্পকার হওয়ার গল্পটাও এখন শুনতে ইচ্ছে হচ্ছে। রেজা, লিমন, ফাতেমা সুমি, শৈলী, ডাঃ ফাহরিন সবার গল্পই অসাধারণ। অমিতা দে আপুর গল্প পড়ে যা বুঝলাম, আপু বেশ আড্ডা মাতাতে পারে।

সেলিম বিশ্বাস এর নাম বিশেষ ভাবে নিতে হয়, কারণ তিনি এই ম্যাগাজিন এর প্রচ্ছদ ও অলংকরণের কঠিন দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রুফরিডিং এর মত কঠিন কাজটিও তার করা। আপনাকে তাই বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞতা।

সম্পাদক সাহেব, মোরশেদ হোসেন মারুফ। আপনার জন্য একটা কথাই বলবো, ভাই আপনি লম্বা রেসের ঘোড়া। ক্যাপ্টেন হিসেবে দারুণ আপনার স্কিল। বেশ সুন্দরভাবে করলেন কাজটা৷ আজকের এই ম্যাগাজিন দাড় করানোর পিছনে আপনার অবদান সবচেয়ে বেশী। আপনার প্রতি শ্রদ্ধার মাত্রা আমার আরোও বেড়ে গেল।

বুক ফটোগ্রাফিঃ
এই গ্রুপ এ আমার দুটো ছবি প্রকাশিত হয়েছে৷ ভাবলাম, নিজের ঢোলটাই আগে পিটায়া নিই৷
এই সেকশনে একটা অসংগতি আমার চোখে পড়লো। ফটোগ্রাফার এর নামটা দেয়া হলে খুব ভালো হত। আর কয়েকটা ছবি স্থান সংকুলানের চেস্টা করতে যেয়ে ছবিটা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যেটা বেশ দৃস্টিকটু মনে হয়েছে।

বুক ফটোগ্রাফি আরোও কোয়ালিটিফুল ছবি দিয়ে আমাদের করা উচিত। অনলাইনে ভালো কোয়ালিটির ছবি না হলে, পাঠকদের দৃস্টি আকর্ষণ করা কস্ট হয়ে দাঁড়াবে৷
আশা করবো, গুগল থেকে ছবি ধার করে নয়, আমাদের ছবি দিয়েই আমরা আমাদের লেখা একদিন আমরা প্রকাশ করতে পারবো৷
সবাইকে অনুরোধ করবো, ভালো মানের ক্যামেরা (মোবাইল হলেও সমস্যা নেই) দিয়ে লেখা, বই সম্পর্কিত ছবি তুলে নিয়মিত গ্রুপ এ দেয়ার জন্য। এটা পরবর্তীতে অনেক জরুরী কাজে আসবে৷

আরোও নতুন কিছু বিভাগ এর জন্য অনুরোধ রাখছি। যেখানে কম্পিউটার, বিজ্ঞান, প্রানীজগত নিয়ে আমরা লিখতে পারি।

★পরিশেষে রেটিং★
ম্যাগাজিনের লে আউটঃ ৪.৮/৫.০০।
লেখার মানঃ ৪.৫/৫.০০ (আমি লিখছি তো, তাই। তা না হলে ৫ ই হত)
সবার অংশগ্রহণঃ ৫.০০/৫.০০

ওভারঅল রেটিং ৪.৯/৫.০০.
নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের লেখক পাঠক জগতে এই ম্যাগাজিন অতিশীঘ্রই সমীহের স্থান দখল করবে৷ সেই প্রত্যাশা রইলো সকলের কাছে৷