❑❑ ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধে অংশ নেওয়া অকুতোভয় নারী বীরপ্রতীক তারামন বিবির জন্ম ১৯৫৭ সালে এবং মৃত্যু ১ই ডিসেম্বর, ২০১৮। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১নং সেক্টরের হয়ে তারামন বিবি জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি।১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক বিমল কান্তি দে প্রথম তার সন্ধান পান।

■■ তারামন বিবিকে নিয়ে আনিসুল হকের লেখা ‘বীর প্রতীকের খোঁজে’ নামক একটি বই রয়েছে।
■■ আনিসুল হক রচিত ‘করিমন বেওয়া’ নামক একটি বাংলা নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন তারামন বিবি।

বুক রিভিউঃ “বীর প্রতীকের খোঁজে”

“মোর সঁড়কি খানা আনতো বাহে —————–
মোর যুদ্ধ মোর একলাকে করা খায়। যুদ্ধের সোমে তোর বাপ মরিল, মোকে কাঁয় বাঁচাইছে। মোর আব্বার গাত যেদিনকা গুলি লাগিল, সেদিন মোকে কাঁয় বাচাঁইছে? মুই গিয়া হাতিয়ার ধরছুম। নিজের বাচাঁ মুই নিজেই বাঁচছোম।আজকাও মোর লাগি কাঁয়ো আসবার নয়, থানাত থাকিয়াও কাঁয়ো আসবার নয়। আবার সে চিৎকার জোড়ে, বাইর কর মোর সঁড়কি খান, অই শালা আজাকারক যদিল আইজকায় খুন না করছি।।“ ——— বলেছিলাম করিমন বেওয়ার কথা। যে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বামী আর পিতার মৃত্যুর পর নিজের হাতেয় হাতিয়ার তুলে নিয়ে প্রাণপণ যুদ্ধ করে চলেন। যুদ্ধশেষে বাড়ি ফিরে আসেন। শ্বশুরের ভিটায় স্বসম্মানে নিজ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। সঙ্গে একমাত্র মেয়ে মোমিনা ও নাতনী ধলা মিয়া। কিন্তু বিধি বাম। দরিদ্র পরিবারের পাশেই বিরাজমান রাজাকার খয়বার মুন্সি। একলা মেয়েমানুষের সামান্য ভিটাটুকুও যে তার চাই। আর তাকে রুখতেই আবার ও রণসাজে, রণমূর্তি করিমন।

যুদ্ধের অনেকদিন পর একদল লোক যায় সৈয়দপুর গ্রামে বীর প্রতিকের খোঁজে। উদ্দেশ্য সেই মহিলা বীরপ্রতিক পদবীধারীকে দে শের সামনে, বিশ্বের দরবারে পরিচয় করানো। অনেক খুজেঁ খুজেঁ পাওয়া গেলেও তার পরিচয় নিয়ে সন্দিহান সকলেই। নানা বিড়ম্বনা আর গল্পকথনের মাঝেই অবশেষে পাওয়া যায় আসল করিমন বেওয়া কেই যে সত্যিকারের বীরপ্রতীক ।

এই বই পড়তে আরম্ভ করলে শেষ না করে ওঠা যায় না , কিন্তু শেষ করার পরও যে উপলব্ধি মনে থাকে তা হলো –মুক্তিযুদ্ধ কখনোই শেষ হয়ে যাবার নয়।

বইয়ের নামঃ বীর প্রতীকের খোঁজে
লেখকঃ আনিসুল হক
ক্যাটাগরিঃ উপন্যাস
প্রকাশনীঃ সময়
পৃষ্ঠাঃ ৮০
প্রচ্ছদ মূল্যঃ ৯০ টাকা মাত্র ।