The Norwegian Book Town

প্যারিস কে আমরা কি বলি ? সোজা উত্তর প্রেম আর শিল্পের নগর

তেমনি কিছু কিছু শহর আছে যেখানে অনেক শখের চাহিদা মেটাতে আমরা ছুটে যাই । যারা বই পড়তে খুব ভালবাসেন তাদের জন্য এই দুনিয়ার রয়েছে একটি চমৎকার ছোট্ট শহর দুনিয়ার একেবারে উত্তরে । আসুন জেনে নেই তাবৎ দুনিয়া থেকে কেন বই প্রেমীরা এই শহরে এসে হাজির হন ?

ব্যস্ত জীবনের ভিড়ে মানুষ অনেকসময় নিরিবিলি কোনও জায়গায় পালাতে চায়। ইউরোপ থেকে প্রচুর টুরিস্ট যায় কিছুদিন নিরিবিলি সময় কাটাতে ।  নরওয়ের মান্ডাল শহর এমনই একটি নিরিবিলি জায়গা যেখানে সময় কাটাতে বিরক্ত লাগবে না কারও। বিশেষ করে যারা বই পড়তে ভালবাসেন তাদের জন্য এটা আদর্শ একটি স্থান। খুব বেশি মানুষের ভিড় নেই এখানে। সাজানো গোছানো ছিমছাম একটি শহরটি । এটি নরওয়ের বই শহর নামে পরিচিত প্রায় প্রতি বাড়ির সামনে আছে একটি উন্মুক্ত বুকশেলফ । এমনকি হোটেলের কামরা গুলি বই দিয়ে সাজানো ।

 

নরওয়ের এই ছোট্ট শহরটিতে বাসিন্দা আছে মাত্র ৩০০ জনের ও কম ,  কিন্তু এখানকার বাসিন্দাদের জন্য শহরটির নানা প্রান্তে প্রাকৃতিক পরিবেশে প্রায়  নতুন পুরাতন মিলিয়ে প্রায় ১৫০,০০০ বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন বুক শেলফে। আর বইয়ের দোকানের পাশে প্রাকৃতিক পরিবেশে বসবার জায়গা, স্থানীয় ক্যাফে, আর্ট গ্যালারি এবং স্যুভিনিয়র দোকানগুলোও আছে। ডিজিটাল যুগে বইয়ের অস্তিত্ব ধীরে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে –এই বিশ্বাস থেকে এখানকার বুক শেলফগুলোতে বই সংগ্রহে রাখা হয়।নরওয়েজিয়ান বুক শহর বলে পরিচিত মান্ডালের বইয়ের শপগুলোতে ১৯৯৫ সাল থেকে বই সংগ্রহ চলছে। মজার ব্যপার হল শহরের প্রতিটা বাড়ী, দোকান, এমনকি ফেরিঘাট বা পোস্ট অফিসেরও থাকে বইয়ের তাক , মুন্ডাল/ MunDal এর অপরনাম The Norwegian Book Town ।

The Norwegian Book Town এখানে বইয়ের পরিমাণ এত বেড়েছে যে গোটা শহরের বই এক করলে তার দৈর্ঘ্য আড়াই কিলোমিটারেরও বেশি হবে। 90 সালের আগেও নৌকা ছাড়া এই শহরে যাওয়া আশা করা যেত না, কিন্তু তাদের দিকে সারা দুনিয়াবাসির নজর ফেরাতে তারা এক কাজ করেছে তা অবিস্মরণীয়

গোটা বিশ্ব থেকে বইপ্রেমীরা এই শহরে ঘুরতে আসেন। তবে উন্মুক্ত বইয়ের শপগুলো শুধুমাত্র গরমের সময় অর্থাৎ মধ্য মে থেকে জুন পর্যন্ত খোলা থাকে পর্যটকদের জন্য। এই সময় বইয়ের মেলাও হয়। কিছু দিনের জন্য এমন পরিবেশে হারিয়ে যেতে পারলে ক্ষতি কি ?