আত্মবিশ্বাস শুধু একটি শব্দ নয়, একটি শক্তি যা আমাদের জীবনের কঠিন পরিস্থিতিও সহজভাবে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।
আত্মবিশ্বাস অভাব আমাদের ভিতরের অনেক সম্ভবনাকেই কুড়িতেই ঝরিয়ে দেয়। জীবনের অনেক সংকল্পই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। কিন্তু, কিছু সহজ পদক্ষেপ সহজেই এই সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে।
নিজের শক্তি ও দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করা হলো আত্ম-বিশ্বাস বাড়ানোর প্রথম ধাপ। তারপর শক্তির জায়গাগুলো বাড়াতে হবে আর দুর্বলতার জায়গাগুলো কমাতে হবে। ধাপে ধাপে শক্তি- সামর্থকে পরীক্ষা করতে হবে। ক্রমে বেড়ে ওঠা লক্ষ্যগুলো অর্জন করে যেতে যেতে আত্ম-বিশ্বাস বাড়তে থাকবে। তারপর নিজের সঠিক মূল্যায়ন করে আত্ম-বিশ্বাসকে শিখরে নিতে পারবে।
আমি বলব আপনাকে করতেই হবে এই মানসিকতা নিয়ে আগিয়ে যেতে হবে, আমার মতে সবচেয়ে বেশী যে জিনিষটা কাজে দেয় সেটা ইবাদত ।
যে কাজ করতে আপনার মনে চায় সেই কাজ গুলো করে যেতে হবে | হার, জিত বা আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে এসব বেপারে সচেতন না হয়ে শুধু সেই কাজ গুলো করে যাব উচিত যা করে আপনি সাচ্ছন্দ বোধ করবেন | সময়ের সাথে সাথে আপনার কর্ম খমতা ও আত্মবিশ্বাস আপনি না চাইলেও বেড়ে যাবে |
কিছু উপায় আমরা বলতে পারি কিন্তু এটা পড়ার আগে মেনে নিন, আপনি নিজেই নিজের সেরা শিক্ষক সেরা গাইড, কিসে কি ফল দেবে আপনার চেয়ে কেউ ভাল জানে না
নিজের ভালো দিক খুঁজে বের করুন
নিজের অসফলতা বা ব্যর্থতার ঘটনাগুলো খুঁজে বের করা একদমই সহজ। কিন্তু কেমন হয় যদি আপনি আপনার ভালো দিকগুলো খুঁজে বের করেন। বেশির ভাগ মানুষের জন্য এটি বড় একটি চ্যালেঞ্জ। আপনার নিজের কোন দিকগুলো আপনার ভালো লাগে, তা আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। নিজের ভালো দিকগুলো নিয়ে নিজে ভাবতে হবে। এতে আপনি নিজের প্রতি বিশ্বাস ফিরে পাচ্ছেন।
নিজের ভুলগুলো শুধরে নিন
নিজের খারাপ দিকগুলো খুঁজে বের করে একটি তালিকা বানিয়ে নিন। সেই তালিকা থেকে নিজে নিজে কোনগুলো শুধরে নেওয়া যায়, সেগুলো আলাদা করুন। সেগুলো শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করুন, আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে।
নিজের দিখে খেয়াল করুন
নিজেকে গড়ে তুলতে, নিজের দক্ষতা বাড়াতে নিজের দেখাশোনা করা খুব জরুরি। মন ও শরীরে আপনি যত সুস্থ থাকবে, তত নিজের প্রতি আপনার আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে। নিজের দেখাশোনা করলে এবং নিজের যত্ন নিলে ভালো কিছু করার বিশ্বাসও বাড়ে। ঘুম ও ব্যায়াম এমন দুটো কাজ যা মন ও শরীর উভয়ের সুস্থতার জন্য সমান গুরুত্ব বহন করে। শুধু একটি শক্ত মন একটি দুর্বল শরীরকে টেনে তুলতে পারে না। আবার কেউ শারীরিকভাবে যতই শক্তিশালী হোক না কেনো, মন দূর্বল হলে উঠে দাঁড়ানো খুবই কঠিন। আর তাই মন ও দেহের সুস্থতার জন্য দেহের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঘুম ও ব্যায়াম খুবই প্রয়োজন।
সম্ভব হলে চেনা পরিবেশ ছেড়ে কোথাও কদিনের জন্য বেড়িয়ে আসুন
কিছুদিনের জন্য চেনা পরিবেশ ছেড়ে কোথাও গেলে নিজেকে নিয়ে বাছ বিচার করার সুযোগ পাওয়া যায়।, এটা অনেক জ্ঞানী মানুষেরা ফলো করতেন। মাঝেমাঝে সময় সুযোগ করে এমন কোথাও বেড়িয়ে পড়ুন আসুন যেখানে গেলে অনুভব করতে পারবেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য। উপভোগ করুন প্রকৃতির বিশালতা। নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেতে এর কোনো বিকল্প নেই। খেয়াল রাখবেন যে আপনি এখানে গিয়েছেন শান্তির জন্যে তাই সমস্ত টেনশন মাথা থেকে দূরে রাখবেন যতটা সম্ভব।
পেছনে তাকান, অর্জনগুলো মনে করুন
জীবন আপনাকে যে অনেক কিছু দিয়েছে, তা আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন, যদি আপনি আপনার জীবনে পেছনের দিকে তাকান। একটু ভাবলেই ছোট-বড় অনেক অর্জন খুঁজে পাবেন। সেসব স্মৃতির কথা মনে করুন যেগুলো নিয়ে আপনি গর্বিত। এই চিন্তাগুলো নিজের কাছে আপনার নিজের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেবে এবং আপনার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে সহায়তা করবে।
ইতিবাচক চিন্তা ও বিশ্বাসে আস্থা রাখুন
কোনো খারাপ কিছু ঘটলেই নিজেকে খুবই একা মনে হয়, নিজের চিন্তাভাবনা, বিশ্বাসের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেন অনেকে। কিন্তু আপনারও যোগ্যতা আছে, ভাবা শিখুন। আপনার মধ্যেও এমন কিছু গুণ আছে, যা আপনাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে। নিজের সেই চিন্তা ও বিশ্বাসগুলোর প্রতি আস্থা রাখুন, যা আপনার ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছে।
লক্ষ্য ও প্রত্যাশা স্থির করুন
আপনি আপনার জীবনে কী করতে চান, তার একটা তালিকা তৈরি করুন। জীবনের এই লক্ষ্যগুলো পূরণের জন্য নিজের মধ্যে দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করুন। এই লক্ষ্যগুলোকে প্রকৃতপক্ষে কীভাবে পূরণ করা যায়, তার বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা তৈরি করুন। দেখুন, নিজের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে এবং কাজ করার উদ্যম পাবেন।
সুযোগ বের করতে বেছে নিতে জানুন
অন্যরা কী বলছে, কী ভাবছে বা কী করছে, তা আপনি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না কিন্তু আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তাই ভিতু না হয়ে সবকিছু মোকাবিলা করার মতো নিজেকে শক্তিশালী করে তুলুন। নতুন কিছু করার জন্য সুযোগ গ্রহণ করুন। এই সুযোগগুলোই হয়তো আপনাকে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের পথে নিয়ে যাবে।
অন্যকে সহযোগিতা করুন
গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য মানুষকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করলে যে শান্তি নিজের ভিতরে আসে তাতে নিজের প্রতি বিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। অন্যের জন্য কিছু করলে নিজের মধ্যে ভালো লাগা বেড়ে যায়, নিজের প্রতি সম্মান তৈরি হয়; যা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে।
মানুষের সাথে মিশুন
নিজেকে গুটিয়ে না রেখে যথাসম্ভব মানুষের সাথে মেলামেশা করা উচিৎ। আপনি যত মানুষের সাথে মিশবেন আপনার মন তত বড় হবে, মনের সংকীর্ণতা দূর হবে। মানুষের সাথে মিশলে অভিজ্ঞতা বাড়ে এবং যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মত ক্ষমতা তৈরী হয় যা আমাদের অনেক রকমের দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখে।
যা আছে তা নিয়ে খুশি থাকুন
অনেক কিছু পাওয়ার লোভ মানুষের মনের শান্তি ও ইতিবাচক আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। নিজেকে নিখুঁত বানানোর চেষ্টা করার দরকার নেই। নিজের যা কিছু আছে, তা নিয়েই খুশি থাকুন। নানা সমস্যা থাকবেই কিন্তু সেই সমস্যা থাকা সত্ত্বেও তা নিয়েই খুশি থাকতে হবে। তাহলেই নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে শো অফ করবেন না
আপনি আপনার নিজেকে চেনেন। কিছু কিছু কাজ থাকে যেগুলো আপনার জন্য অনেক কঠিন হবে, কিন্তু সেটি করা আপনার জন্য আবশ্যক। এই অবস্থায় নিজের আত্মবিশ্বাস বজায় রাখার জন্য নিজেকে নিজেই বোকা বানিয়ে বলুন, এই কাজ তো আমার জন্য কোনো বিষয়ই নয়। দেখবেন নিজেকে এভাবে বোকা বানাতে বানাতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে, সেই কাজটি করে ফেলেছেন আপনি।
ইতিবাচক চিন্তা করুন
মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকাংশে ঠিক করে দেয় কি হতে যাচ্ছে তার জীবনে। তাই আপনাকে শিখতে হবে যে কিভাবে আপনি নিজেকে আরো ভালো রাখতে পারবেন। তাই সবসময় এমন মানুষ বা জিনিসের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করা উচিৎ যা পজিটিভ চিন্তা করতে উৎসাহ দেয়। আপনার চিন্তাধারাই আপনাকে রাখবে দুশ্চিন্তামুক্ত। ক্ষণস্থায়ী জীবনে দূশ্চিন্তা মানসিক ও শারীরিক উভয় শান্তি নষ্ট করে। তাই দুশ্চিন্তামুক্ত একটি শান্তির জীবনের জন্য উপরোক্ত পন্থাগুলো মেনে চলার চেষ্টা করলে নিজের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি..