চুইঝাল
চুইঝাল গরুর মাংস রেসিপি ।

চুইঝাল পান পাতার মতই দেখতে একধরনের লতানো গাছ,  এর মুল কান্ডটাকেই মশলা হিসাবে ব্যবহার করা হয় ।  এই গাছ বেশ মুল্যবান , কারো এই গাছ চুরি হলে থানায় মামলা করতেও শুনেছি।  শজনেগাছে চুইঝালের গাছ খুব ভালো হয়। ঝাল বেশি হয়, গাছের বৃদ্ধিও হয় দ্রুত। সুপারি, মেহগনি, আম, শিরীষ, নারকেলগাছকে অবলম্বন করেও ভালভাবে চুইঝাল গাছ বাড়তে পারে।

চুইগাছ বড় হলে গাছের কান্ড কেটে পানিতে ধুয়ে মাছ,মাংস, সবজি কিংবা নিরামিশে ব্যবহার করা যায়। এক্ষেত্রে কান্ডটিকে ২-৩ ইঞ্চি লম্বা করে কেটে তারপর আবার ছোট ছোট ফালি করে মাংস বা তরকারীতে দেয়া হয়। ১ কেজি গরুর মাংসের জন্য ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম যথেষ্ট। সমগ্র দক্ষিন বঙ্গে ব্যাপক প্রচলিত এই চুই গাছ।  সাতক্ষীরার চুকনগরের চুইঝাল সবচেয়ে বিখ্যাত বলে প্রচলিত থাকলেও যশোরের কেশবপুর,মনিরামপুরেও ভাল মানের চুই ঝাল পাওয়া যায়। খোলা বাজারে ৪০০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হয় ।

আসুন দেখে নেই কিভাবে চুইঝাল দিয়ে গরুর মাংস রান্না করা যায়

গরুর মাংস ১ কেজি, চুইঝাল ১০০ গ্রাম , লবণ পরিমাণ মত।  হলুদ ১ চা-চামচ। রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ আধা কাপ, জিরা বাটা হাফ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া হাফ টেবিল চামচ, আদাবাটা হাফ টেবিল চামচ,  গরম মসলার গুড়া ১ চা চামচ, তেজ পাতা ও দারু চিনি এক টুকরা। আস্ত রসুন ৫-৬ টা

চুইঝাল গরুর মাংস রান্নার প্রনালী।
আমি বেশ দেখে কয়েক বার টেস্ট করে একটা উপায় বের করেছি।

চুই ঝাল বাদে সমস্ত মসলা ৫০ গ্রাম তেলের দিয়ে মাংসের সাথে ভাল করে মাখিয়ে ম্যারিনেট করে রেখে ঘণ্টা খানেক দিন। মাংসে যদি চর্বি থাকে। তা থেকে পিয়র চর্বি টুকরা করে কেটে কড়াইতে তেল গরম হয়ে গেলে, চর্বি ছেড়ে দিন নাড়া দিয়ে ভাজতে থাকুন, ভাজা হয়ে গেলে তেজ পাতা, এর দুই টুকরা দারুচিনি দিন , ২০-৩০ সেকেন্ড পরে চাইলে চর্বি গুলি তুলে ফেলে দিতে পারেন কারন আমরা এর ফ্লেভার নিয়ে নিয়েছি, পরে ম্যারিনেট করা মাংস ঢেলে দিয়ে নাড়তে থাকুন, মাংস কষানো হয়ে গেলে মাংস সিদ্ধ করতে পানি দিন। পানি অর্ধেক হয়ে এলে চুইঝাল দিয়ে দিন , সাথে হালকা খোসা ছাড়ানো রসুন গুলি দিয়ে দিন (রসুন আস্ত থাকবে)  । ১৫-২০ মিনিট পরে তেল আর ঝোল লাগা লাগা হয়ে গেলে, এক চিমটি গরম মসলার গুড়া ছিটিয়ে দিতে পারেন । সামান্য জালে আরো ৫ মিনিট দমে  রাখুন , ব্যস হয়ে গেল চুইঝাল গরুর মাংস ।

এই মাংস , পরাটা, রুটি, সাদা ভাত, পোলাওর সাথে পরিবেশন করা যায়, সাথে হালকা সালাদ ।

অনন্য স্বাদের এই রান্নাটি সোজা, শুধু একটু ধৈর্য আর ভালবাসা দরকার

চুইঝালের এই রান্নাটা কেন অন্য রকম
কারন ঝোলের পানি একবারই দিয়ে একটু সময় নিয়ে  রান্না করা হয়। এতে স্বাদ থাকে অটূট
চর্বি ফ্রাই  করে ফেলে দিলে তেলে ফ্লেভার থেকে যাবে কিন্তু গলানো চর্বি থাকবে না পরে
চুইঝাল এর মাংসে ভারী মসলা গুলি হাফ করে দিতে হবে, গুড়া মসলা বেশি দেয়ার দরকার নেই,
ঝাল বেশি দেয়া যাবে না, কারন চুই নিজেই একটু ঝাল জাতীয় মসলা।
আপনি যদি খেতে অভ্যস্ত হয়ে যান তখন, আদা , রসুন আর জিরা বাটা বাদে শুধু হ্লুদ, পিয়াজ, চুইঝাল আর একটু গরম মসলা দিয়েই খেতে পারেবন ।