আপনি হাটে বাজারে যাইবেন তারপর সবুজ তরতাজা লাউ দেখিয়া কিনিতে মনে লইবেনা এমন বাঙালী ব্যাটাছেলে কমই দেখা যায় কিন্তু আপনি যদি ব্যাচেলর হন , তাহা হইলে যেনতেন লাউ বা কদু বা লাউয়া একখানা কিনিয়া আনিয়া বুয়ার সামনে ফেলিয়া দিয়েই আপনার দায়িত্ব শেষ , তাহা গড়াইয়া কোন দিকে যাইবে তাহা আপনর খেয়াল করিবার সময় থাকলে তো, আর স্বাদ সে কিরুপ হইবে তাহা আর ভাবনার অপেক্ষা রাখে কই,
কিন্তু আপনি বিবাহিত পুরুষ মানুষ হন তাহালে লাউ কিনিবার ইচ্ছে পোষণ করিবার আগে আপনাকে ব্যাপক হিসাব নিকাশ করিয়া ক্যাল্কুলেটিভ ঝুকি লইতে হইবে সেই সাথে আপনাকে ব্যপক বড় কলিজার অধিকারী হইতে হইবে , হিসাব নিকাশ ( আকার আকৃতির কথা ভুলে যান কারন যেনতেন একটা লাউ হলেই পরিবারে সবার হয়ে যায় ) হল , এর সাথে কি মাছ কিনিবেন, পুটী? শিং? শোল? কারন এই মাছ গুলিএর সাথেই লাউএর সেরা সাধ ধরা দেয়,
সেই সাথে গিন্নির মেজাঝ মর্জির ও হিসাব মিলিয়া লইতে হুইবেক ।
ধরে নেই আপনার জীভে জল এলেও পুটি মাছ কিনিবেন না কারন বাসায় নিলেই টর্নেডোর ভিতর পড়িয়া যাইবেন, গিন্নির মুখের উপর কথা না ব লিয়া থাকাই শ্রেয় হইবে , আর এক সমস্যা হল মহিলারা শোল মাছ খেতে কম পছন্দ করে ( অবশ্য ব্যাতিক্রমও আছে ) কারন বিদঘুটে কালো রং আর কাটাকুটির ঝামেলা , বাকি থাকল শিং মাছ তাহা কিনিলে বাজার থেকে কাটিয়া নিয়ে যাইবেন বা অন্য যেকোন মাছ হলেও ।
বাসায় প্রবেশ করে আপনি যখন বাজার এর ব্যাগ রান্না ঘরে রেখে হাত পা ধুয়ে একটু রেস্ট লইবার কথা চিন্তা করবেন ততক্ষণে আপনার গিন্নি , লাউ এর গলার দিকে বাম হাতে মুট পাকাইয়া ধরিয়া ডানে বা বা ঘুরাইয়া দেখিবে তারপর ডান হাতে টাস টাস করিয়া কয়টা বাড়ি দিবে , যদি আপনি সেই আওয়াজ শোনেন ধরে নিন , আপনার কেনা লাউ আপ্নার গিন্নির পছন্দ হয় নি । কিছুক্ষণ গজর গজর করিতে পারে কিন্তু আপনার তো এই গুলি শুনে অভ্যস্ত
সুতরাং উপায় নেই গুলাম হুসেন চুপ থাকুন , আর দোয়া করুন যাতে বাড়ীতে মা চাচিরা যেইভাবে রাধতেন সেই রকম কিছুটা হলেও স্বাদ আসে ।
একটা গোপন কথা বলি , সভ্য সমাজে লাউয়ের কদর কমিয়া গেছে, বড় দাওয়াতে বয়স্ক পুরুষ মানুষ কদাচিৎ খায় আর মহিলারা এম্নিতেই পানসে তরকারি পছন্দ কম করে । এমনকি দেশে বড় বড় রেস্টুরেন্ট গুলিতে টাকা দিয়ে আপনি কিছু কিছু দেশি সবজি পাবেন না , সব বিদেশী সবজি নিয়ে ব্যস্ত আর এটার সেল ভ্যালুও কম
……………………
গল্প বহুত হইলে এইবার কিছু ট্রাজিক গল্প পড়ে হাসেন
১ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার শান্তিপুর জামে মসজিদের জমিতে উৎপাদিত একটি লাউ গতকাল বুধবার দুপুরে নিলামে তোলা হয়। মাত্র এক কেজি ওজনের ওই লাউটির নিলামের ডাক দেন পাশের মর্দনপুর গ্রামের কবির মিয়া। লাউটির দাম এক পর্যায়ে ৬০০ টাকা পর্যন্ত ওঠে।
এমন সময়ে বাধা দেন শান্তিপুর গ্রামের জালাল মিয়া। তাঁর দাবি, এ নিলাম ডাকবেন তিনি। কবির মিয়া যেহেতু মসজিদ কমিটির কেউ নন তাই তিনি নিলাম ডাকার অধিকার রাখেন না। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে শুরু হয়ে যায় দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ। এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৫০ জন। তাঁদের মধ্যে ২৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে ।
২ আমার রুমমেট ছিল একটা বরিশালের ছেলে সে বাজারে গিয়ে কচি লাউ আর লাল শিং মাছ দেখে কিনে এনেছে এখন আমি লাউ দেখে বলি আরে ব্যাটা এই তোর কচি লাউ? তার উত্তর কি কন ম্যায়া এইয়া মুই তো হচি দেইক্যাই আনলাম , আমি কই আরে বেডা দেখ লাউতাতে মিনিমাম ৪০-৪৫ তা খামছির দাগ , সবাই খামছা-খামচি মাইরা রাইখা গেল আর তুই কিনে আনলি ? রুমমেট এর চেহারা এর তখন দেখার মত নাই, বলিল ধুর হালায় ব্যাডায় তো দেহি মোরে এট্টা ঠগ দেয়া দেলে!!
৩। আমাদের বাড়ির পাশে মাচায় আম্মু গাছ লাগাতেন বিভিন্ন সিজনে বিভিন্ন রকম তো লাউ গাছে লাউ ধরছে বেশ কিছু এর ভিতর একটা লাউ মাচার উপর রেখেছে বেছন হিসাবে পাতা দিয়ে ডেকে , লুকিয়ে রাখা এক প্রকার, আমার ছোট ভাই তখন খুব ছোট তার আবদার লাউ আমি ছাড়া কেউ কাটবে না , ত ঠিক আছে তারে মা বললেন গাছে থেকে একটা লাউ কেটে নিয়ে আয় । সে যেয়ে সেই বিচি দেয়ার জন্য বেছন লাউটাই কেটে নিয়ে আসছে, যা খাবার মত আর নেই ইতিমধ্যেই হ্লুদ হতে শুরু করেছে কিন্তু বেছন লাউ সাধারণত গাছ মারা গেলে কাটা হয়। লস হল দুই দিক দিয়ে, খাওয়াও যাবে না, বিচিও হবে না, মা জিজ্ঞেস করতেই তার উত্তর তুমি বল্লা না যেঁ ভাল দেখে একটা কেটে নিয়ে আয় তা আমি বড় আর ভাল দেখেই তো আনলাম , মা বলে আরে ব্যাটা এইটা তো বেছন রাখছিলাম তুই এটা কি সর্বনাশ করলি ? তখনো স্কুলে না যাওয়া আমার ছোট ভাই বিরস বদনে দুই গালে দুই হাতে দিয়ে বলে ওঁ তাই এই ব্যাপার!!!! তা আগে বলবা না
লাই নিয়ে আর কোন কাহিনী মনে পড়ছে না, আপনাদের কারো মনে পড়লে বলুন
এতক্ষন লাউ লাউ করলাম আর খাওয়া দাওয়া হবে না তা কি হয় , কিন্তু লাউ থেকে সেরা স্বাদ বের করে লাউ খেটে হলে রান্নাটা হওয়া চাই সিম্পল , তাই কয়েকটা রেসিপি লিখলে পোস্ট বড় হবে অনেকটা, গালি খেতে চাই না আজ