সেন্টমার্টিন ভ্রমণ বা বেড়ানোর ইচ্ছা প্রচন্ড্র থাকলেও এতদিন যাওয়া হয়নি সেন্টমার্টিন নানা কারনে , হুট করে এক বড় ভাইয়ের ফোন পেয়েছিলাম , তারা যশোর থেকে একটা বাস ভাড়া নিয়ে আসছে । আমাকে কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন, বান্দরবন , রাঙ্গামাটি বেড়ানোর প্রস্তাব দিতেই চোখের সামনে সমুদ্রের নীল জল দেখতে পেলাম, বান্দরবন , রাঙ্গামাটি আমাকে অতটা টানে নি , কারন বাবার সেনাবাহিনীর চাকুরীর কারনে ওই ২ জেলায় আগেই ছিলাম, রাঙ্গামাটি ধরতে গেলে আমার ছেলে বেলার শহর। জীবনের সেরা সময়টা এইখানেই কাটিয়েছি । হাতের কাজ গুলি গুছিয়ে আমি পরদিন কল্যানপুর থেকে ঐ বাসে রাত ১.৩০ উঠে দেখি সব ব্য়স এর মানুষ আছে । মনে মনে প্রমাদ!!!!!! গুনলাম, খাইছে এই কাফেলার পিছনে আরও ২ টা বাস আছে , অভিজ্ঞতা থেকে জানি এই রকম এর ভ্রমনে সবসময় দেরী হয়।
এই ধরনের ক্যারাভান ভ্রমনে সবসময় যা হয় আর কি , এই খানে থামে চা-পানি পান করতে , তো ওইখানে তেল নিতে, কিছু দুর যেয়ে নাশতা করতে , প্রথমে বিরক্ত লাগলেও পরে কি করে যেন ভালো লাগতে শুরু করলো বুঝতে পারিনি । এই ভাবে কক্সবাজার আসতেই পরদিন দুপুর হয়ে গেলো যে ডুলাহাজরা সাফারি আর পার্ক যাওয়া হল না।
দুপুরে খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে থেকে রাত বিচ ও আশেপাশে বেড়ালাম । আশে পাশে অনেক বিচিত্র কিছু খেয়াল করেছি, কলাতলী পয়েন্টে এত মানুষের আনাগোনা উফ!! ভালো লাগল না খারাপ লাগলো বুঝতে পারছিলাম না, ১৯৯৪ আর ২০১৪ তে অনেক তফাত তো হবেই, তবে একটু পরে ভালো লাগছে বুজতে পারলাম , আমার মুল গল্প টা কক্সবাজার নিয়ে নয় । সেন্টমার্টিন নিয়ে।
পরদিন খুব সকালে বিচ এ গিয়ে চোখ জুড়িযে গেলো , যেমন টি চেয়েছিলাম তেমন ই , বিচ একেবারে নির্জন ,তবে আস্তে আস্তে মানুষ এর কোলাহল শুরু হতে থাকল , কিছু ছবি তুলে সকাল ৭ টায় বাসে উঠলাম টেকনাফ যাবার জন্য , রাস্তার হাল খারাপ একেবারেই তাই ২ ঘণ্টার কিছু বেশী সময় লাগল , টেকনাফ যাবার একটু আগে চোখে পড়বে লবণ এর ঘের , লবণ এর চাষ যে লবনাক্ত পানি জমিয়ে শুকিয়ে করা হয় , প্রথম বার শুনে অনেকে অবাক হলো । পথে বিজিবি চেকপোস্ট এ সাবধান বানী শুনলাম , ভালো ভাবে যাবেন কিন্তু কোন বেআইনী মালামাল আনতে পারবেন না ।
সেন্টমার্টিন যাবার জাহাজ ঘাট টেকনাফ শহর থেকে কয়েক কিমি আগে, ওখানে খাবারের দোকান গুলির হাল খারাপ , জাহাজ গুলি ও পুরানো ‘কেয়ারি ডাইন এন্ড ক্রুজ’ কাজল ,এলসিটি কুতুবদিয়া’ (ওরফে কপালপোড়া কেন নাম দিলাম পরে বলব) আর বে ক্রুজ ১ ওটার ভাড়া সবচেয়ে বেশী ৯০০ টাকা এর বাকি গুলি ৫৫০-৭০০ এর ভিতর।
৯:৩০ এ জাহাজ ছাড়ল সবে মাত্র ভাল লাগতে শুরু করেছে , তবে ১০ কিমি নাফ নদীর পথ যেন ফুরাতেই চায় না, গাংচিল দের অলস ডানায় ঊড়ে বেড়ানো খারাপ লাগবে না , কথা দিলাম ইচ্ছে করলে আপনি ওদের চিপস বাতাসে ছুড়ে খাওয়াতে পারবেন পানিতে পড়ার আগেই ছো মেরে খেয়ে নেয় । যাবার সময় না হলে ফেরার সময় নিশ্চিত পারবেন । শান্ত নীলচে সবুজ পানি , ম্যানগ্রোভ বন , নৌকা, জেলেদের মাছ ধরা, বার্মিজ সীমান্ত , অন্য জাহাজ দের পাশ কাটিয়ে যাওয়া দেখতে দেখতে , জাহাজ সাগরে পড়লে হাল্কা দুলুনি অনুভব করবেন , দ্বীপটি যতই কাছে আসতে থাকবে আপনার ব্যকুলতা ততই বাড়তে থাকবে। ইচ্ছে করবে যেন সাগরে ঝাপ দিয়েই চলে চাই সৈকতে। দ্বীপে পা দিয়েই বুঝতে পারবেন এটিকে নিয়ে মানুষ কেন এত মাতামাতি করে, কেনইবা একে বলা হয় সুন্দরের লীলাভূমি। বাংলাদেশে যতগুলো সুন্দর পর্যটন এলাকা রয়েছে সেন্ট মার্টিন তার ভিতর অন্যতম ও নান্দনিক । সেন্ট মার্টিন এর তীর এর দেখা পেলে খুশি লাগবে ১২.৩০ ঘাটে এসে পড়বেন ।
একটা মাত্র জেটি হবার কারনে একটার সাথে আর একটার লাগিয়ে যাত্রী নামায় , সব জাহাজ থেকে ৪০০০/৫০০০ মানুয এর নামা এক কঠিন অভিজ্ঞতা, কাজল রেখা জাহাজ সবার পরে আসার কারনে ৩ টা জাহাজ এর ভিতর দিয়ে জেটিতে নামলাম , সবার আগে ছেড়ে সবার পরে আসলো কপালপোড়া নাম দিয়েছিলাম এই কারনে । অনেক মানুষের ভীড়ে লাগেজ সাবধান , ব্যাকপ্যাক হলে যে কত সুবিধে টের পাবেন , লাগেজ ক্যারিয়ার হলে টানতে টানতে জান বেরিয়ে যাবে (জানুর দিকে রাগে ফিরে তাকানোর সময় পাবেন না হা হা হা 🙂 )
সোনা হইতে সাবধান !!!
জেটির সামনে হবার কারনে মানুষ খিদের চোটে সোনা মিয়ার রেস্টুরেন্ট এ খেতে বসে , ভাত, ছোট্ট রূপচাঁদা ফ্রাই , শুটকি, ডাল খেয়ে ৪০০ টাকা দিতে নিশ্চই আপনার মন চাইবে না, বাজারে বাম পাশে প্রাসাদ প্যারাডাইস হোটেল এর নিচের রেস্টুরেন্ট এ ১২০-১৫০ এর ভিতর ভাল দুপুর ,রাতের খাবার পাবেন ,
পেট ঠাণ্ডা তো হলো , এবার কি ছেড়াদীয়া ঘুরে এসে আবার ৩ টায় জাহাজ এ ফিরে যাবেন নাকি ? !!!!! এক মিনিট ভাই , বেশীর ভাগ মানুষ দেখলাম এই কাজ ই করতে সেন্টমার্টিন এসে ২/১ রাত না থাকা এর দিল্লী এসে তাজ মহল না দেখা একই কথা । আমাদের সাথের সবাই সেই দিন ই ফিরে গেল বান্দরবন এর দিকে, কিন্তু আমি আর আমার এক বড় ভাই সেন্ট মার্টিন এর মায়ায় থেকে গেলাম ।
সেন্টমার্টিন হোটেল খুজতে হলে বাজার এর আশে পাশেই অনেক থাকার জায়গা পাবেন ৪০০/৬০০-১০০০/১৫০০ টাকার ভিতর । তবে ভাই দাম দর করে নিবেন আমাদের থাকার জায়গা ঠিক করি সীহাট নামের একটা লজ এ , ৩ টায় সব জাহাজ ছেড়ে যাবার পর , তখন সব হোটেল এই কম দামে রুম পাওয়া যায়, রুমটা ছিমছাম , ঘরোয়া , সুন্দর ছিল ।
ফ্রেশ হয়ে বেড এ একটু গা এলিয়ে দিতেই ঘুম আস্তে চায় কিন্তু না , পাত্তা না দিয়েই ছোট একটা ব্যাগ এ পানির বোতল , ক্যামেরা , নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম । আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সেন্ট মার্টিনে গিয়ে মারা যাওয়া ও নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ধারণা করা হচ্ছে জোয়ারের উল্টো স্রোতের কারণেই তারা তলিয়ে গেছেন।রিপ কারেন্ট বা উল্টো স্রোতে পড়লে কি করবেন ? এবং উলটো স্রোতে কি ভাবে বাচতে হবে?
যারা সাতার জানেন তারা রিপ কারেন্টে পড়লে, উলটো দিকে তীরের দিকে না গিয়ে সৈকতের সমান্তরাল ভাবে সাতার কেটে উলটো স্রোত থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, সাগরের স্রোত যখন টান দিবে তখন শক্তি দিয়ে স্রোতের বিপরীতে পাড়ের দিকে ফেরা যাবেনা। ভাল সাতারু হলেও না ।
জীবনে হয়ত অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন , ভিন্নতা পেতে ছুটে গেছেন দেশের বাইরেও কিন্তু দেখা হয়নি ঘরের পাশের এই ছোট্ট স্বর্গপুরী । আপনার ক্লান্ত জীবন নিমেষেই পালটে দিতে পারে এই দ্বীপের হাওয়া । হারিয়ে ফেলা সেই ছন্দময় নিজেকে আপনি আবার ফিরে পেতে পারেন সেন্টমার্টিন এসে ।
পায়ে হেঁটে ৩-৪ ঘন্টায় আপনি ঘুরে ফেলতে পারেন গোটা সেন্টমার্টিন দ্বীপ । সাদা বালুকা বেলা , গভীর নীল জল , ছোট বড় প্রবাল , রঙবেরঙের মাছ , অগুনতি নারিকেল গাছ কিংবা কেয়ার ঝাঁড়, দ্বীপের সরল সোজা মানুষ গুলো আপনার অপেক্ষায় থাকে। আমার মিশে যেতে সমস্যা হয় না কারন মিরসরাই পার হলেই মুখ থেকে অনর্গল চট্টগ্রাম এর আঞ্চলিক ভাষা বলতে পারি । আপনার জীবনের অনবদ্য সুখ স্মৃতি হয়ে থাকবে এই দ্বীপ , আলো আধারির খেলায় কাটানো এই দ্বীপের রাত আপনি আবার ফিরে পেতে চাইবেন নিশ্চয় । তাজা মাছের স্বাদ আপনার ভূরি ভোজন কে করবে তৃপ্ত । যদি খুব ভাগ্যবান হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ও পেতে পারেন ভরা পূর্ণিমায় উত্তাল সাগরের প্রেমে পড়ার সুযোগ, যে সুখানুভূতি আপনি বর্না করার ভাষা হয়তো পাবেন না কেবল মনেপ্রাণে উপভোগ করতে পারবেন।
ঘুরতে ঘুরতে অনেক মজার জিনিস দেখতে পারবেন সেন্টমার্টিন এ , কেয়া বন , নামটা অনেক রোমান্টিক শোনালেও কাঠলের মত আস্ত ফল দেখে চমকাবেন না। ১ টা ডাব কিনবেন ১৫/২০ টাকায় তাতে ১ লিটার এর বেশি পানি পাবেন , এর এক লিটার পানির দাম ৩০ টাকা, সেন্টমার্টিন এ ডাব ই আর শুটকি সবচেয়ে সস্তা , ছেলে মেয়েদের কাছে অনেক প্রবাল শোপিছ পাবেন , প্লিজ ওগুলি কিনবেন না ওদের ওপর ই সেন্টমার্টিন দ্বীপ দাড়িয়ে আছে । পুব দিকের মাঝে বালুকা বেলায় বালিতে বসে থাকুন সন্ধে নামা অবধী ,পায়ের গোড়ালিতে ঠান্ডা ঢেউ গুলি এসে পড়লে অনেক ভাল লাগবে সাথে না থাকলে প্রিয়জনের অভাব অনুভব করবেন এই সময়ে ।
পুব দিকের বিচের সামনে নীল দিগন্ত রিসোর্ট তার সামনে থেকে সালাম নামে একজনের সাথে কথা বলে তার বোট ঠিক করলাম পরদিন ছেড়াদিয়া যাবার জন্য , ক্লান্ত দেহে ঘুম আসবে অনেক , বাজার আশে পাশে থাকলে সন্ধে টা ভালো কাটবে রাত ১১ টার পর জেনারেটর অফ হয়ে যায়, তার আগেই মোবাইল বা ল্যাপটপ চার্জ দিয়ে নিন , যারা বাজারের পাশে থাকবেন গভীর রাত ধরে আড্ডা দিতে পারবেন জেটি তে । আমি লজ এর মালিকের কাজ থকে ফিসিং রড আর লাইন ( ছিপ আর সুতা) নিয়ে ২ টা কোরাল মাছ ধরেছিলাম জেটি তে বসে ।
সেন্টমার্টিন এ এসে পরদিন ছেঁড়াদ্বীপে যাত্রা , সালাম ভাই এর বোটে উঠেই সমুদ্র কি জিনিষ টের পেলাম , একটু পরে তাল সামলে নিলে উনি আমার হাতে বোটের হাল ধরতে দিলেন , ঢেউ বাদিকে আসলে হাল বামে নিতে হবে কিছুতেই উলটা দিকে না , উফফফফ বেপার টা সহজ না, বোটে যেতে ছোট নৌকার মাঝি দের ২০+২০ টাকা দিয়ে হয় , কারণ বড় বোট তীরে আসে না , সাবধান খালি পায়ে নামলেই পা কেটে যেতে পারে , প্রবাল পাথর অনেক ধারাল , ছেড়াদিয়া আসতেই যেন , ধরা র অনেকটা সুন্দর রূপ দেখতে পেলাম , যেটা বলে বোজানো যাবে না । তবে আরও একটু রোমাঞ্চ এর জন্য স্কুবা ডাইভিং ও স্নোরকেলিং দুটোই করা যাবে। (স্নোরকেলিং গিয়ার নিয়ে যাব পরের বার ) পানির গভীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে পুরোদস্তুর তৈরি হয়ে তবেই স্কুবা ডাইভিং করা যাবে। এ জন্য সাঁতার জানতেই হবে। অন্য দিকে স্নোরকেলিংয়ের জন্য অতটা প্রস্তুতির দরকার নেই। চোখ ও নাক ঢাকার মাস্ক হলেই চলবে। পানির খুব একটা গভীরেও যেতে হবে না। হেঁটেই পানির নিচে সব কিছু দেখতে পারবেন। সাঁতার না জানলেও চলে। তবে স্নোরকেলিংয়ের জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হলো ছেঁড়াদ্বীপ। এর জন্য সেন্ট মার্টিন থেকে ট্রলারে করে যেতে হবে ছেঁড়াদ্বীপে। ওশেনিক স্কুবা ডাইভ সেন্টার এবং ঢাকা ডাইভারস ক্লাব সাহায্য করবে রোমাঞ্চকর এ দুটি অভিযান করার জন্য। স্কুবা ডাইভিংয়ের জন্য খরচ পড়বে পাঁচ হাজার টাকার মতো। স্নোরকেলিংয়ের জন্য লাগবে দুই হাজার টাকার মতো। তবে দরদাম করলে এর কমেও পাওয়া যেতে পারে।
সেন্টমার্টিন এ ছেঁড়াদ্বীপে কোনো মানুষ বসবাস করে না, জেলেরা দিনের বেলা মৎস্য আহরণ করে এবং রাতে স্বগৃহে ফেরে । ছেড়াদিয়ার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কাঁচস্বচ্ছ জল আর প্রবাল পাথর। কোন এক হারামির দল মনে হয় কেয়া বনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল , তার চিহ্ন দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। এ দ্বীপের চারিদিকের জল এত স্বচ্ছ যে,অনেক গভীরে অবস্থানরত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, প্রবাল ও সামুদ্রিক শৈবাল খালি চোখে স্পষ্ট দেখা যায়।এমন অপরূপ দৃশ্য অবলোকনের সুযোগের জন্য ছেঁড়াদিয়া মানূ্যের নিকট অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত। এখানে দক্ষিণ দিকে তাকালে আপনি বাংলাদেশ এর শেষ পাথর/মাটি ও দেখতে পাবেন
কিভাবে যেন কয়টা লাইন মিলিয়ে ফেলেছিলাম সেন্টমার্টিন কেয়া বনের পাশে বসে থেকে থেকে ।
যেখানে আঁকাশ হারায় সমুদ্র নিলে
গাংচিলেরা খেলা করে আলসে বিকেলে ,
কেয়া বনে শুনা যায় বাতাসের গান ।
বালিয়াড়িতে লতাগুল্মরা মেলে ধরেছে প্রাণ
সমস্ত ব্যস্ততা ফেলে এখানে এসেছি সেই প্রাণের টানে ।
নিশ্বাসে সজীবতা নিয়ে আবার যখন ফিরে যাবো
এখানে বসে যে নিঃসঙ্গতাটুকুও উপভোগ করেছিলাম
যা মনে রবে অনেক দিন ।
দুপুরে ফিরে নীল দিগন্ত রির্সোট এর সামনে অনেক ক্ষন ধরে গোসল করলাম , ভঁয় পাবেন না হাঙর বা জেলি ফিশ এর উৎপাত নেই, আর দেখলেও ভালোবেসে ধরতে যাবেন না যেন, সাতার কাটলাম , মজার বেপার হল বুক সমান পানিতে আপনি কিছু না করেই চিত হয়ে হাত পা ছড়িয়ে অনেক ক্ষণ ভেসে থাকতে পারবেন , কি মজার না ? আমিতো ৮৪ কেজি ওজন নিয়ে পারলাম হা হা হা !!!
সেণ্টমার্টিন আরও ২ দিন ছিলাম যার টানে সময় পেলেই আবার যেতে চাই।
_____________________________________________________________________________
সাথে কি কি নিলে ভালো হবে ।
ক্যামেরা ও বাইনোকুলার +ব্যাটারী+চার্জার,পলিব্যাগ ,সানক্যাপ , সানগ্লাস , সানব্লক , টিস্যু , ব্যক্তিগত ঔষধ, লোশন, লিপ জেল, ব্যাগ,গামছা, ছাতা, শীতের কাপড়, পানির বোতল, টুথপেষ্ট+ সাবান+শ্যম্পু , কেডস/ সেন্ডেল,
সেন্টমার্টিন বেড়াতে গেলে যে বিষয়গুলো আপনাদের একটু খেয়াল রাখা উচিত ;
-রিপকারেন্ট খুব খারাপ জিনিস , ওটা যখন হয় , কোমর সমান পানি থেকেও নাকি মানুষ ডুবে মারা যায়,
– সেন্টমার্টিন এ নেশা জাতীয় কিছু জিনিস সহজে মেলে , কিনবেন না, বিজিবি চেক করে সাথে পেলে কেলেঙ্কারি ঘটে যাবে ।
– সেন্টমার্টিন ভ্রমণকালে কোন গাছপালা ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
– সেন্টমার্টিন ভ্রমণকালে সাথে নিয়ে যাওয়া চিপস্, চানাচুর, বিস্কিট ও অন্যান্য দ্রব্যাদির পলিপ্যাক যেখানে সেখানে না ফেলে হোটেলের বিনে ফেলুন অথবা নিজের সাথে করে দ্বীপটি থেকে বাহিরে নিয়ে আসুন।
– সৈকতে কাপড় ধোয়া ও সাবান দিয়ে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন।
– প্রবাল কেনা থেকে বিরত থাকুন।
-কচ্ছপ ও অন্যান্য প্রানী শিকার উচ্চ শব্দে গান বাজনা বাজানো থেকে বিরত থাকুন।
-সেন্ট মার্টিন দ্বীপের মানুষেরা অত্যন্ত ধর্মপরায়ণ। তাঈ এখানে শালীনতা বজায় রেখে দ্বীপটির রিতিনীতি মেনেচলার চেষ্টা করুণ।
স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলুন , মিশুক আচরণ করুন, হালকা দরদাম করার অভ্যাস না থাকলে বিপদে সব জায়গায় পড়তে পারেন ।
You must be logged in to post a comment.