জার্মানির ফ্রেইবার্গ এ ১৮৬৭ সালে সদ্য ১৭ বছর বয়সী একটি মেয়ে মারা যায় । তাকে ফ্রেইবার্গ এর কবরে শায়িত করা হয় । অবাক করা ব্যপার হল কেউ জানে না তাঁর কবরে ১৫০ বছর ধরে প্রতিদিন কে বা কারা তাজা ফুল রেখে যায় । গ্রীষ্ম, শীত এমন কি ভারী তুষার পাতের দিনেও তাঁর কবরে প্রতিদিন সকালে তাজা ফুল পয়াওয়া যায় । ক্যারলিন ক্রিস্টিন ওয়াল্টারের যে হাতে একটি বই ধরা সেই হাতে কে বা কারা তাজা ফুল রাখে সেটা ১৫০ বছর জুড়ে আজও একটা রহস্য । মেয়েটি মারা যাবার পরে ১৫০ বছরে মিনিমাম ৫০০০০ এর বেশি তাজা ফুল দেয়া হয়েছে ।

ক্যারলিন এবং তার বড় বোন সেলমা তাদের মা বাবা মারা যাবার পরে তাঁর দাদির কাছে ফ্রেইবার্গ এ আসে, সেইখানে সে ১৬ বছরে পড়লে স্কুলে ভর্তি হয় , সে ছাত্রী হিসাবে ও মানুষ হিসাবেও ভাল ছিল , তাঁর বড় বোন সেলমা বিয়ে করলে সে বোনের পরিবারের সাথে বসবাস করতে শুরু করে ।

১৮৬৭ সালের গ্রীষ্মের শুরুতে ক্যারলিন 17 বছরে পড়ার আগেই আবিষ্কৃত হয় সে যক্ষ্মায় আক্রান্ত তা থেকে খুব যন্ত্রণা ভোগ করে এবং কয়েক সপ্তাহ পর মেয়েটি মারা যায় ।

সেলমা চেয়েছিল বোনের কবরটিতে একটি স্থায়ী ভাস্কর্য স্থাপন করতে । ক্যারলিনের জীবনের শেষ দিকে বিছানায় শুয়ে বই পড়ার সৃতি তাঁর মনে হয়ত গেথে ছিল তাই ভাস্কর কে সেই ভাবে ভাস্কর্য স্থাপন করতে বলেছিলেন ।

২০০ বছর পুরানো ফ্রেইডহফ সিমেট্রিতে  ক্যারলিনের  কবরটি  বাহিরের দেয়ালের সাথে বসানো হয় যা আগে থেকেই অনেকেই চিরনিদ্রায় সমাহিত হয়ে আছেন , মেয়েটি মারা যাবার পরে তাঁর কবরে প্রতিদিন তাজা ফুলের দেয়ার জন্য এখনো এটা এখনো লোক মুখে বিখ্যাত হয়ে আছে ।

ক্যারলিন মারা যাওয়ার পর সেলমা তার কবরে ফুল দিতে যেত মাঝে মাঝে, যারা কবরস্থান পরিদর্শন করত প্রায়ই তারা লক্ষ্য করেছিল  যে সবসময় ক্যারোলিন এর কবরে একটি তাজা ফুল থাকত। মহাকালের নিয়মে দিন,  মাস, বছর ধরে এটি নিয়মে পরিণত হয়ে যায় এবং ফুল দেয়া অব্যাহত থাকে। গ্রাউন্ড কিপার বলেছিল যে,  ফুলগুলো কে দিয়ে যায় প্রতিদিন তা কেউ বলতে পারেন না। তারা কোন ভয়ের স্বীকারও হন নি কোনদিন ।

অবাক করা ব্যাপার হল , ক্যারলিন কোন যুবুককে বলেও যায় নি কোন দিন, কিন্তু লোক মুখে প্রচলিত আছে ক্যারলিন কে পড়াত সেই ছেলেটি তাকে খুব পছন্দ করতেন , এবং ক্যারলিন মারা যাবার পরে তাকে জন সম্মুখে খুব বেশি দেখা যেত না সে হয়ত শুরুতে এই কাজ করতে পারে কিন্তু তারো ১৫০ বছর ধরে বেচে থাকার কথা না । পরে সেই ছেলেটি কি তাঁর পরিবারের কাউকে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিল কিনা বংশ পরম্পরায় এই কাজ করে যেতে । এটা কেউ বলতে পারে না , আপনি যদি আজকেও সেই কবরের কাছে যান তবে সকালে দেখতে পাবেন তাজা একটি ফুল দেয়া আছে ।

এখনও তাঁর কবরে সূর্যের মিষ্টি আলো গাছের পাতা ভেদ করে খুব অল্প মেলে । প্রতিদিন ঝিরি ঝিরি মিষ্টি বাতাস বয়ে যায়, খুব শিতে তুষারপাত ক্যারলিনের কবর ডেকে দেয়, কিন্তু একটি তাজা ফুল দিতে কে যেন প্রতিদিন ভুল করে না ।

হ্যায় ক্যারলিন!! যদি বুঝতে পারত, কি অমোঘ ভালাবাসায় সে জড়িয়ে থাকে প্রতিদিন ।