রহস্য কিংবা থ্রিলার বই বরাবেরে মত আমার প্রিয়। আর তা যদি মিসির আলী সিরিজের হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই। হুমায়ূন আহমেদের এক অনন্য সৃষ্টি মিসির আলি সিরিজের এক রহস্যময়ী উপন্যাসের নাম “তন্দ্রাবিলাস”। তন্দ্রাবিলাস নামটা খুব সুন্দর মনে হলেও তন্দ্রাবিলাসের জগৎটা মোটেই সুন্দর না এবং এর মূল ব্যাপার’টা কিন্তু বেশ ভয়ংকর।
.
★কাহিনী_সংক্ষেপঃ
সকাল ১১ টায় মিসির আলি বেতের চেয়ারে পা তুলে বসে আছেন।ভোর বেলায় মানুষের মেজাজ ভালো থাকে। বেলা বাড়তে বাড়তে মেজাজ ও খারাপ হতে থাকে। মিসির আলীরও একি অবস্থা। তবে তার মেজাজ টা বেশি খারাপ। কারণ একটা অপরিচিত মেয়ে। সে নিজের নাম বলেছে সায়রা বানু। বাক্স পেটরা নিয়ে চলে এসেছে মিসির আলীর বাসায় থাকবে বলে। এতে তিনি আশ্চর্য ও বিরক্ত! আর একটা কারন হচ্ছে মেয়েটা নিজের ইচ্ছা মতো শুধু কথা বলেই যাচ্ছে।
মিসির আলী বুঝতে পারছেন মেয়েটা অনবরত মিথ্যা বলে যাচ্ছে। এমন কি একটু পর এটাও বুঝতে পারলেন মেয়েটার নাম সায়রা বানু না। তখন সে বলল তার নাম চিত্রা। মিসির আলী মেয়েটাকে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে বললেন। মেয়েটি চলে গেল। কিন্তু সে তার জিনিস পত্র ফেলে রেখে গেল। মিসির আলী ভাবলেন হয়তো সে ফিরে আসবে। কিন্তু ১০ দিন চলে গেলেও মেয়েটি ফিরে আসেনি। যাওয়ার আগে সে একটা ফোন নাম্বার দিয়ে গিয়েছিল। মিসির আলী সে কাগজ খুলে দেখলেন তাতে কোন নাম্বার নয় বরং লেখা রয়েছে Help me! তিনি কিছু টা অবাক হলেন, হয়তো সে খুব বিপদে পরেই তার কাছে এসেছিলো। কিন্তু তিনি তাড়িয়ে দিলেন। এগুলো ভেবেই খারাপ লাগল। মেয়টার সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায় কিনা, সে আশায় মেয়েটার সুটকেস খুললেন। সব কিছু ঘেটে তিনি এক গাদা কাগজ পেলেন। সেটা যে মিসির আলীকে উদ্দেশ্য করে লেখা, তা তিনি বুঝতে পারলেন। চিঠিটা নিয়েই পুরো গল্পের প্লট। মেয়েটি তার জীবনের বেশ কিছু রহস্যজনক ঘটনা উল্লেখ করেছে চিঠিতে। তার মৃত আপনজনেরা দেখা করতে আসে তার সাথে।কেউ পর্দার আড়ালে লুকিয়ে থাকে,কেউ আবার খাটের নিচে বসে কাঁদে।তার স্বপ্নে দেখা সবকিছু সত্যি হয়ে যায়।স্বপ্নকে নিয়ন্ত্রন করার অসম্ভব ক্ষমতাও আছে তার। স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি। কিন্তু এই মেয়ে ইচ্ছাপূরণ স্বপ্ন দেখে। শুধু তা-ই নয়, সে ইচ্ছে করলে স্বপ্ন বদলাতেও পারে। এটা কী কখনো সম্ভব! আপনাদের কী মনে হয়।মেয়েটা সত্যি বলছে!
মেয়েটি আসলে কে? কী তার আসল পরিচয়?
” এবার আপনাকে একটা ধাঁধা জিজ্ঞেস করছি। বলুন তো কোন প্রাণীর দুটা লেজ? খুব সহজ! একটু চিন্তা করলেই পেয়ে যাবেন।”এই ধাঁধাটি মেয়েটি চিঠিতে একেবারে শেষে মিসির আলীর উদ্দশ্য লিখেছে। মিসির আলী কী এই ধাঁধাটির উত্তর পেয়েছিলেন! আর এই ধাঁধাটির উত্তর কী আপনার জানা আছে?
সকল প্রশ্নের সমাধান রয়েছে “তন্দ্রাবিলাস” বইটিতে।
.
সম্পূর্ণ চিঠি পড়ে মিসির আলি বুঝতে পারলেন ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে মেয়েটি। কি সেই বিপদ! মিসির আলী কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করবেন! এই রহস্যর সমাধান জানতে হলে তো অবশ্যই বইটা পড়তে হবে।
.
★প্রিয়_উক্তিঃ
“যেসব মেয়েকে দেখবেন খুব মায়া মায়া চেহারা, আপনি ধরেই নিতে পারেন তারা প্রচুর মিথ্যা কথা বলে”।
“প্রেম এবং করুণা এক ব্যাপার নয়”।
.
★পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ
অসম্ভব ভালো লাগার একটা বই।হঠাৎ করে একটা মানুষের আসা, এবং নাটকীয় ভঙ্গিতে চিঠি দিয়ে যাওয়া। এসব কান্ড সকল পাঠককে কৌতুহলী করে তুলবে খুব সহজেই। বইয়ের ভিতরে প্রবেশ করে পাঠকও মিসির আলীর সাথে রহস্য ডুবে যাবেন। যেমনটা আমি হয়েছি। তাছাড়া মিসির আলী যেখানে আছেন, চমক তো সেখানে অপেক্ষা করছেই।
রেটিং-৫/৫
হ্যাপি_রিডিং
.
#এক_নজরে_বইটিঃ
বইয়ের নাম : তন্দ্রাবিলাস
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
ধরণ : রহস্যময় উপন্যাস (মিসির আলি)
অন্বেষা প্রকাশনী
পৃষ্ঠাঃ৯৬
মূল্যঃ১৬০
আমাদের গ্রুপে মুল পোস্ট করেছেন , রেহানা ।