এইচ এস সি র সময় টুশী র বাংলা স্যার কে বেশ লাগত।
উনার মেয়ে টুশীর ব্যাচমেট।
টুশীর বাবা নেই। টুশী ভাবে, সোহেলি কত ভাগ্যবতী। এরকম একজন বাবা পেয়েছে।
বাংলা স্যারের ক্লাসে উনি এত্ত ফান করে পড়ান যে কখনও ই বোর লাগেনা কারুর। স্যারের ক্লাস করতে অন্য সেকশন থেকে স্টুডেন্ট রা এসে পড়ত।
টুশির সোহেলির সাথে ভাল বন্ধুত্ব হয়।
সোহেলি কে সে বলে যে তার বাবাকে তার বাবা ডাকতে ইচ্ছা করে। এত চমৎকার একজন মানুষ সোহেলি র বাবা, সোহেলি র মত ভাগ্যবতি সে না!
সোহেলি কোন উত্তর করেনা।
বলে, টুশি আমার বাবার কাছে প্রাইভেট পড়। তাহলে বাসায় আসতে পারবে,পড়ার পর কিছু সময় গল্প করতে পারবে। টুশী রাজি হয়।
পড়তে আসে।
সোহেলি রা দুই বোন দুই ভাই। সোহেলি র মা ও চমৎকার মানুষ কিনতু একটু গম্ভীর।
টুশী ভাবে, সোহেলি র মা আবার বিরক্ত ও না হয়৷ কারন প্রাইভেট পড়ার পর বেশ কিছু সময় টুশি আর সোহেলি গল্প করে,চা খায়।
একদিন বিকেলে,পড়া শেষে টুশী বসে আছে বারান্দায়। সোহেলি চা বানাতে কিচেনে।
টুশি শোনে, তার প্রিয় স্যারের গলা।
স্যার উনার ওয়াইফ মানে সোহেলি র মা কে বলছে, শারি কিনে দেই, খাও তিন বেলা এরপর আবার হাতে টাকা লাগে কেন? আমি মানুষ একা, পাচ জন বসে বসে খাও লজ্জা করেনা?
ফকির এর মত হাত পাততে ত শরম লাগেনা তোমার!

টুশী হতভম্ব!

তার সব চেয়ে প্রিয় মানুষ এর এ কি ভাষা!

সোহেলি চা হাতে বারান্দায় আসে। টুশি র ফ্যাকাশে মুখ দেখে বলে, শোন টুশী- দূর থেকে মনে হয় আমরা ভাগ্যবান বা যে কোন মানুষ ই। কিন্তু কাছে র থেকে তুমি অনেক কিছুই বুঝতে পারবে।
উপলব্ধি করতে পারবে।
এটা আমার বাবার সব চেয়ে ভদ্র ব্যবহার আমার মায়ের সাথে।
আমার মা শিক্ষিত।
কিন্তু চার চারটে ছেলে মেয়ে কে ঠিকঠাক মত সময় দিতে গিয়ে বাইরে চাকরি করা হয়নি।

আমার মা র অনেক ইগো। খুব দরকার না হলে উনি চান না। কিন্তু আমার বাবার এই ব্যবহার ই থাকে।
এই যে আমার বাবার এত ফ্যান ফলোয়ার কলেজে- এগুলো দেখে আমি হাসি।

হউত আমার বাবার অঢেল নেই কিনতু কম ও নেই। যা কমতি তা হল আমার মাকে রেস্পেক্ট না করার জ্ঞ্যান।

হয়ত আমার বাবার কথা ঠিক, কিন্তু এক সময় আমাদের পড়াশোনা শেশ হবে।
আমরা নিজের পায়ে দাড়াবো। আমরা বাবা মা কে দেখব। কিন্তু দিনের পর দিন মার প্রতি বাবার এই ব্যবহার আর বাইরে বাবার ফ্যান ফলোয়ার এর পাগলামি আমি মিলাতে পারিনা।

টুশী কিছু বলেনি।

কি বলবে?
সে নিজেও কি মেলাতে পেরেছে?

আজকেও কি পারছে?

(কাল্পনিক গল্প এবং পুরাই এলোমেলো কাল্পনিক!)