পরীক্ষায় ফেল করার পর ছাত্রছাত্রী ও বাবা মা দের আচরন কেমন হওয়া উচিত । কুমিল্লা বোর্ডের মৃত ১১জনের মধ্যে একজনের সুইসাইড নোট
“আগামি বছর আবার পরীক্ষা দিবো। মা, বাবাকে বুঝাইছি। সবাই স্বাভাবিক ছিলো, আমিও। কিন্তু একের পর এক প্রতিবেশী সহপার্ঠীরা মিষ্টি আর কথার খোঁচা নিয়ে হাজির হতে লাগলো। আমার মায়ের মাথা খারাপ হয়ে গেলো।। বাবাও আমাকে গালিগালাজ করলো।
যে মা বাবা গতকাল আমার মাথায় হাত রেখে বলছিলো চিন্তা করিস না, বুড়ো হয়ে যাস নাই। সামনের বার আবার পরীক্ষা দিস, বছর যাইতে কয়দিন।
.
অথচ, প্রতিবেশীদের মিষ্টি পেয়ে সেই বাবা মা আমাকে জুতা দিয়ে পিঠলো। শুধু তাই নয়, আমার উপর রাগ করে বাবা পাতের ভাত লাথি মেরে ফেলে দিলো।
অনেক চেষ্টা করেছি লুকিয়ে থাকার, পারলাম না। প্রতিবেশীরা এক হাত জিহ্ববা বের করে অনুশোচনা করলো, শুধু অনুশোচনা নয়, আমার জন্য নাকি আমার মা দায়ী। মায়ের আস্কারা পেয়ে আমি নষ্ট হয়ে গেছি।
তাদের কৈফিয়ত পেয়ে বাবা আমার মা-কে উঠানে প্রচুর মেরেছে। মা এখনো বেহুঁশ। মার জ্ঞান ফিরার আগেই পৃথিবীকে বিদায় জানালাম।
ভালো থাকবেন প্রতিবেশীরা
ভালো থেকো সহপাঠী বন্ধুরা।।”
কয়েক বছর পরীক্ষার্থী এসএসসি, এইসএসসি পরীক্ষার্থী ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে ফেলের হার ও বেড়ে যাওয়ায় আত্মহত্যার হার বাড়ছে অন্যতম কারণ হচ্ছে গিয়ে পরীক্ষার ফেল করার কারনে , মানসিক চাপ সইতে না পারা , ফেল করা ছেলেমেয়েকে মানুষ ভালো চোখে দেখে না, যে পাস করে যায় সে অবশ্যই জীবন পরের ধাপ এগিয়ে গেল কিন্তু ফেল করা ছেলে বা মেয়েটি সমস্ত মানসিক চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করে বসে। এটা ফ্যামিলির কাছে আজীবনের জন্য একটা দুঃখ হয়ে থাকে আজ আমরা এ বিষয়ে ।
জীবন আসলে সফল এবং ব্যর্থতার প্রতিনিয়ত একটা খেলা আপনি এখানে কখনো সফল হবেন কখনো বিফল হবেন । বিফল হলে আবার চেষ্টা করবেন , আবার চেষ্টা করতে হবে এভাবে বারবার চেষ্টা করার মাঝে মানুষ আসলে ঘুরে দাঁড়ায়, একবারে কখনো মান সফলতার শিখরে যে দাঁড়াতে পারে না । পরীক্ষায় ১৩, ১৪ লাখ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিলে যে সবাই পাস করবে এমন না সবার স্ট্যান্ডার্ড সমান না সবাই সমান মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করেনি । পরীক্ষায় ফেল করার পরে যখন মানুষ তার উপলব্ধি করতে পারে সেই দিন গুলির অনুশোচনা আসলে অন্য কোনো কিছু দিয়ে হয়না । পরিবারের হাজার বকাঝকা করার আত্মীয়-স্বজনদের মা বাঁকা চোখে তাকানো। এগুলো আসলে একটা সাইড ইফেক্ট আপনি ফেল করেছেন বলেই তো হয়েছে আপনাকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে এবং সবার মুখে হাসি ফোটাতে হবে এটা সাময়িক একটা চাপ এই জিনিসটা কাটানোর চেষ্টা করতে আপনাকে ঘুরে দাড়াতে হেব ।
মনে রাখতে হবে একটি পরীক্ষায় ফেল বা কম নাম্বার পাওয়া জিবনে শেষ করে ফেলে না ।
যারা পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বা হবে, তাদের মনে রাখা ভালো, পৃথিবীর অনেক সফল, বিখ্যাত ব্যক্তি পড়াশোনায় তেমন ভালো করতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল, বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন, স্টিভ জবস, বিল গেটস, এমনকি আইনস্টাইন।
সন্তান পরীক্ষায় ফেল বা খারাপ করলে অভিভাবকের আচরন কেমন হওয়া উচিত।
খেয়াল রাখতে হবে যে ফেল বা ক্রারাপ করার কারনে ছেলে মেয়ে যাতে ভেঙে না পড়ে । সে জন্য তাদের মানসিক ভাবে সাপোর্ট দিতে হবে। সহ্য ক্ষমতা বাড়াতে পাশে থাকতে হবে । সন্তান পরীক্ষায় খারাপ করলে এটা আসলে বাবা মারই কেয়ার লেস হবার একটা ফলাফল ।
১. সন্তানের সঠিক যত্ন নিতে হবে। তাদের পরীক্ষা ভীতি করে সহায়তামূলক পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে।
২. তাদের আত্মবিশ্বাস নষ্ট নয় এমন কাজ করা যাবে না । মোবাইল , পিসি , গেম , এসব আসলে ওয়ান ওয়ে কমিউনিকেশন। বাইরের পরিবেশে মিশতে দিতে হবে, যাতে তাদের ইন্টার একটিভ যোগাযোগের দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ে এবং তীব্র আবেগ ও অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতা তৈরি হয়।
৪. মা-বাবা, পরিবারের দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানের মধ্যে বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে দেওয়া। জিপিএ ৫ ই জীবন না এটা বুঝতে হবে সবার , অনেক ক্ষেত্রে তথাকথিত জিপিএ-৫ পাওয়া, পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার মতো অবাস্তব ও অপ্রয়োজনীয় লক্ষ্য আমরাই তাদের মানসে সেট করে দিই। এগুলো বাদ দিতে হবে। প্রতিকূল পরিস্থিতি সম্বন্ধে ইতিবাচক পুনর্মূল্যায়নে সহায়তা করতে হবে সন্তানদের। পরীক্ষায় ফেল করার পর হতাশ সন্তানদের কতজন ইতিবাচক মূল্যায়নে সহায়তা করেন? যদি নিজেরা সমর্থ না হন, অভিজ্ঞ মনোবিদের কাছে নিয়ে যান।
৩. দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জনের জন্য সন্তানদের অধ্যবসায়ী হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে। ব্যর্থতা সত্ত্বেও, প্রবল বাধা, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং অব্যাহতভাবে জীবনসংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার মানসিকতা যাতে গড়ে ওঠে সেই শিক্ষা দিতে হবে।
ছাত্রছাত্রী দের যা করতে হবে ।
১. সত্য সহজ ভাবে নিন অতিরিক্ত আতঙ্কিত হবে নাঃ— প্রথমে বলব সত্য সহজভাবে মেনে নিন আপনি পরীক্ষায় ফেল করেছেন এটা চরম একটা বাস্তবতা হয়ে আপনার জীবনের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে । দোষ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন এটা করলে ওঠাও তো এটা করলে এটা তো আমি পরীক্ষায় প্রশ্ন তো না লিখাটা লিখলে পাশ করতাম, আজকে আমার এই হয়েছে কালকে ওই হবে আমাদের জীবনে কিছুই হবে না কি হল না হল জাস্ট একটা কথা বলব সহজ ভাবে নিন , আপনার সামনে যে জিনিসটা আছে সেটা সত্যতা সম্পর্কে সজাগ হোন আপনার মাথার মধ্যে রাখুন জিনিসটা আমি ফেল করেছি আমাকে আমার পরবর্তী কর্তব্য ঠিক করতে হবে ।
২. এর পরে যে কাজটা করা উচিত আমার মনে হয় আপনি কিছুদিন সময় নেন, সবকিছু থেকে বিরতি নেন , পরীক্ষায় ফেল বা পরাজয়ের গ্লানি আসলে চিন্তা করতে করতে মানুষ আরো বেশি ভেঙে পড়ে তাই এই সমস্ত বাধা থেকে আপনি যদি মুক্তি পেতে চান আমার মনে হয় যে জিনিসটা করা ভালো কিছুদিন ব্রেক নেওয়া ভালো আমি পারলে কোথা থেকে বেড়িয়ে আসুন আপনার পরিবেশটা আপনি একটু পাল্টে নিন বা ইজি করে নিন। যেটা আপনাকে পরবর্তী লড়াইটা লড়তে আপনাকে সহায়তা করে ।
৩. জীবনে একটি মাত্র একটি ব্যর্থতা দিয়ে নিজেকে সংজ্ঞায়িত করবেন না—ব্যর্থতা একটি ঘটনামাত্র এটা উত্রে যাবেন একটা প্লান করেন কিভাবে এই বাধা পার হতে হবে , এটা করতে যেয়ে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করবেন না—পরিবারের লোক, বন্ধুবান্ধব সবার সঙ্গে সংযোগ রাখুন । মনের মাঝে গ্লানি, অপমান, কষ্ট চাপিয়ে রাখবেন না শেয়ার করুন। প্রিয়জনদের সান্নিধ্যে থাকো। নিজের ওপর যেমন নির্ভর করবে, তেমনি শুভাকাঙ্ক্ষীদের ওপরও নির্ভর করো। নিজের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যা ভালো লাগে করো, সামাজিক যোগাযোগ বাড়িয়ে দাও, ভালো ঘুম দাও, পুষ্টিকর খাবার খাও, ব্যায়াম করো। কোথায় ও কার কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া যেতে পারে, তার একটি তালিকা তৈরি করো।
৪ নিয়ম মেনে পড়াশুনা করে অতিতের ভুল গুলি শুধরে , জীবনকে একটা নিয়মের ভিতর নিয়ে আসলে পরীক্ষায় পাস করা সোজা , আসল কথা লাইফে যে পরীক্ষা গুলি আসে সেটাকে আগে থেকে ভুলে থাকা যাবে না প্রস্তুত হতে হবে ।
ফেসবুকে বই পড়ুয়াদের https://www.facebook.com/groups/swapybooks এই গ্রুপে আমরা বিভিন্ন পজিটীভ বিষয় নিয়ে আলাপ করি। যোগ দিতে পারেন আমাদের সাথে, শেয়ার করতে পারেন আপনার কথা ।