ইফতার এর পর ক্লান্তি দূর করতে আমরা কি কি করতে পারি ।

সারাদিন রোজা রাখার ফলে শরীর স্বাভাবিক ভাবে একটু বিশ্রাম চায় কিন্তু অনেক কষ্টে নামায পড়েই আমাদের বেশির ভাগ মানুষের ভীষণ ক্লান্তি লাগে । তখন আসলে টের পাওয়া যায় জীবনীশক্তি র কি রকম প্রভাব আমাদের পরে । রমজান যত শেষ এর দিকে যেতে থাকে আমাদের ক্লান্তি তত পেয়ে বসে । কিন্তু আমরা যদি কিছু টিপস প্রাকটিস করি তাহলে আমরা ইফতার পরবর্তী ক্লান্তিতে কমিয়ে আনতে পারব ।

সুষম ইফতার এর জন্য মেন্যু পরিবর্তন জরুরী

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই ফল ফলাদি , জাউ, পায়েস, বার্লি, জব,  দুধ এই সব দিয়ে ইফতার সারে কিন্তু আমরা দিল্লী স্টাইলে ভাজা-পোড়া খাবার খাবার এত পছন্দ করি যে এটা থেকেই বিপত্তি শুরু, কারন শরীর সারাদিন পর এই সব শক্ত খাবার হজম করতে অনেক পানির ব্যবহার করে আমার আপনি পানি সাথে সাথে খেলেও পাকস্থলী হুট করে কাজ শুরু করতে গিয়ে আমাদের শক্তি শুষে নেয় যার কারনে ক্লান্তি লাগে তাই , পিউর ভাজাপোড়া বাদ দিন খাবার তালিকায় স্যুপ, সবজি, হাতে বেলা রুটি,  জাউ, পায়েস, ছাতু দুধ, ঘরে তৈরি কাবাব থাকতে পারে, আর খেজুরের সাথে অন্য তাজা ফল । দেখবেন ক্লান্তি কমে এসেছে অনেকটাই ।

ইফতার মেনু

ইফতার সময় খাবারের পরিমাণ 

ইফতারের সময় প্রথম কথা কম খেতে হবে,  ! ইফতারের পর ক্লান্তি লাগার অন্যতম কারণ বেশি খেয়ে ফেলা। ভরপেট খেয়ে ফেলার পর হাঁসফাঁস করতে করতে এমনিতেই ক্লান্তি জেঁকে বসে, ঘুম পায়। পরদিন দেখবেন টক ডেকুর উটবে যা ভীষণ বাজে। সুতরাং হিসাব করা খাবার ইফতারে খান, তারপর দৈনন্দিন কাজ শেষে রাতের খাবার খান। সেটাও পরিমিতভাবেই। অনেকেই ইফতারে বেশি খেয়ে রাতের খাবার বাদ দেয়া যাবে না এতে আমাদের দেহঘড়ীর ১২টা বেজে যাবে এতেও ক্লান্তি বাড়ে।

সঠিক পানীয় ইফতার এর সময় গুরুত্বপূর্ণ

ইফতারের সময় কার্বনেটেট বেফারেজ একেবারেই বাদ দিতে হবে। বেছে নিন অল্প চিনি লেবু লবণে তৈরি শরবত প্রথমে অল্প খান, নামাযের পরে যত পিপাসা পাবে তত খান, কিন্তু একবারে হাফ বা এক লিটার খাবেন না সেই  সাথে বিশুদ্ধ সাদা পানি পান করুন। কারণ পানির অভাব থেকেও ক্লান্তি বোধ হয়ে থাকে। একবারে বেশি নয়, অল্প অল্প করে বারবার পানি পান করাটাই উচিত।  এ ছাড়াও ইফতারে এক গ্লাস গ্লুকোজ পান করতে পারেন

ইফতার সেরেই অন্য কাজ নয়  

ইফতার ও নামাজ শেষ করেই মোবাইল ফোন বা টিভির দেখা বা দৌড়ে শপিং করতেও চলে যাবেন না বরং কিছুক্ষণ শান্ত হয়ে বসে বিশ্রাম নিন। সুযোগ পেলে কিছু স্মময়হ শুয়ে থাকুন। ঘুমালে আরো খারাপ লাগবে। মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট একটু বিশ্রাম নিলেই ঝরঝরে বোধ করবেন। যাদের চা বা কফি খেতে মন চাইবে সেই ক্ষেত্রে ইফতারের ২০-৩০ মিনিট পরে লাল চা খান ।

বেশির ভাগ প্রয়োজনীয় কাজ দিনেই সেরে রাখুন । 

ইফতার পরে করবেন ভেবে কাজ ফেলে রাখবেন না  যতটা সম্ভব জরুরি কাজগুলো সেরে নিন।

সেহরিতে খাবেন পরিমিত ও বুঝে 

সেহরিও বেছে নিতে হবে হালকা খাবার যা সহজে হজম হবে , বাড়ি খাবার যেমন পোলাও , গরুর মাংস , খিচুড়ী খেলে সারাদিন পানি শুন্যতায় ভুগবেন , গলা শুকনো লাগবে  মেনুতে থাকতে পারে সহজে পাহ্য খাবার যেমন সামান্য ভাত, মাছের ঝোল, ডাল, সবজি। বেশি করে  তেল,  ঝাল-মসলা দেওয়া খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলুন। এতে সারাদিন শরীর ক্লান্ত হবে কম , আর ইফতারের পর ক্লান্তি বোধ করবেন না।

রমজান সবে শুরু, তাই প্রতিদিন নিয়ম করে উপরিউক্ত কাজগুলো ঠিকঠাক মতো করুন। তাহলেই দেখবেন রোজা রাখার পরও আপনার শরীর ক্লান্তিহীন।