আসুন আরও একবার ঘন হইয়া বসুন, এই উষ্ণ বঙ্গীয় সমতটের পাললিক অববাহিকার ছোট ছোট বাচ্চা কিন্তু মেধায় এবং শয়তানিতে অনেক প্রাপ্ত বয়স্কদেরদেরও পরাজিত করিয়া স্বমহিমাতে উজ্জ্বল একজন ছোট ভদ্রলোককে লইয়া একটু জানিয়া লই:
ছবির এই গুণধর ভদ্রলোক সম্পর্কে আমার ভাইগনা আর আমি অধম তাহার মামা। তাহার প্রতিভার সহিত আপনাদের অনেককেই আগে বেশ কয়েকবার কিঞ্চিৎ পরিচয় করাইয়া দিয়াছিলাম। আসুন আজ তাহার আরও কিছু গুনকীর্তন করিয়া লই।
তাহাকে নিতান্তই হাবা গোবা সুদর্শন কোনো ব্যাক্তি ভাবিয়া ভূল করিবেন না। বান্দ্রামিকে তিনি স্বীয় প্রতিভা দ্বারা মোটামুটি শিল্পের পর্যায় লইয়া গিয়াছেন। তাহার মাতা তাহার এই উন্নতির জন্য আমাকে প্রকাশ্যেই দায়ী করিয়া থাকেন। আমি অবনত মস্তকে তাহা মানিয়া লইয়াছি।
ছাত্র জীবনে গণিতের বিভিন্ন সমাধান করিতে যাইয়া আলফা,বিটা,গামা,থেটা এই সমস্ত শব্দের সহিত পরিচয় হইয়াছিল। আর আমরা বন্ধুরা একে অন্যের অপকর্মের উচ্চতা বা গভীরতা বুঝাইতে বলিতাম ওতো গামা লেবেলে চলিয়া গিয়াছে। আমার এই ভাইগনা ইতমধ্যে শয়তানির এই সমস্ত লেভেলকেই পরাস্ত করিয়া ফালাইয়াছেন।
নিজ গৃহে তিনি সব ভয়ঙ্কর অপকর্ম করিয়া যখন সাক্ষাৎ যমদূত তাহার জন্মদাত্রী মাতার নিকট ধরা পরিয়া যান তখন কোনরূপ কথা না বাড়াইয়া সরাসরি বলিয়া বসিবেন কই তিনি তো ইহা করেন নাই,অথবা অবস্তা বেশি বেগতিক দেখিলে বিনয়ের অবতার হইয়া তাহার মাতাকে বলিবেন”আম্মু তুমি কি এখন আমাকে মাইর দিবা”। বলুন এই বঙ্গীয় তল্লাটে এমন কোনো পাষান জন্মদাত্রী মাতা কি রহিয়াছেন যিনি তাহার পুত্রের এই সরল স্বীকারোক্তির পর তাহার পূত্রকে প্রহার করিতে পারেন?
তাহার ছবির এই ভাব দেখিয়া মনে হইতেছে তিনি ইন্ডিয়ার ডন যেমন “ছোটা শাকিল” তেমনি এই বঙ্গীয় তল্লাটের ভবিষ্যৎ ডন “ছোটা রাফি”। রাফি তাহার ডাক নাম। ইহারও কারন রহিয়াছে,তাহার হাত বেশ ভালোই চলে। তিনি কোথাও হইতে মাইর খাইয়া আসিয়াছেন আর অন্যকে মাইর দিয়া আসেন নাই তাহার কোনও নজির নাই, আর নিশানাও বেশ চমৎকার। আমি আবার ইহার ভুক্তভোগি কিনা!
ইহা নিশ্চিত করিয়া বলিয়া ফেলা যায় যে,নিকট ভবিষ্যতেই তিনি নারীকূলের হৃদয়ে বেশ শক্ত করিয়া ঝাকি দিতে আরম্ভ করিবেন এবং অনেক প্রীয়দর্ষিণীর চোখের পানি,নাকের পানি এক করিয়া দিবেন। স্বীয় হৃদয়কে তিনি কুমড়ার ফালির ন্যায় ভাগ করিয়া নারীকূলের মাঝে বিতরণ করিবেন।
তাহার মাতা তাহার ভবিষ্যৎ লইয়া ভীষণ চিন্তিত হইয়া পরিলেও আমি মোটেও বিচলিত নই। এই সমস্ত মিচকা দ্বিপদী বান্দরগুলাই দেখিবেন পরবর্তীতে একাডেমিক জীবনে যথেষ্ট ভাল ফলাফল করিয়া বসে। তবে ইহাও সত্য তাহাদের এই বিচিত্র বান্দরামি সামাল দিতে যাইয়া তাহাদের মাতা পিতাগনের অনেকেই হৃদযন্ত্রের অসুখ অথবা উচ্চ রক্তচাপের চিরস্থায়ী রোগী হইয়া যাইতে হয়।
বিদ্র: সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ করিয়া বলা যাইতেছে যে,আপনার সন্তানকে ইশকুল নামক জেলখানায় অথবা দশ কেজি ওজনের বই খাতা টানিবার কামলা গিরি হইতে মাঝে মাঝে নিষ্কৃতি দিয়া তাহাকে মন প্রাণ খুলিয়া তাণ্ডবলীলা চালাইতে দেন। বিজ্ঞান বলে আপনার সন্তানের এই তুঘলকি কান্ডগুলাই তাহার মস্তিষ্কের নিউরনসেল গুলাকে অধিক হারে সক্রিয় করিয়া তুলিবে যাহা তাহার মেধা বিকাশকেই তরান্বিত করিবে।