বুক রিভিউ
বইঃ দি মোটরসাইকেল ডাইরীজ
লেখকঃ আর্নেস্তো চে গ্যাভেরা

সময়টা জানুয়ারী ১৯৫২। দুইজন তরুণ “বুয়েন্স আয়ার্স” থেকে যাত্রা শুরু করবে বলে মনস্থির করলো। উদ্দেশ্য, পুরো দক্ষিণ আমেরিকা ঘুরে দেখা। ম্যাপ এ রাস্তা দেখে নিলো। সাথে নিলো ৫০০ সি সি এর একটা মোটর বাইক। শক্তিশালী “দি পোডেরোসা”। বেশ দামী বাইক, কিন্তু সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান আর্নেস্তো এর জন্য এই টাকা কোন ব্যাপার না। তাই তো ডাক্তারী পাশ করেই ২৩ বছরের যুবক সিদ্ধান্ত নিলো পুরোদমে পেশায় প্রবেশ করার আগে জীবনটা কে একটু উপভোগ করে নেয়ার।

সময়টা “কিউবিয়ান রেভোল্যুশন” এর আট বছর আগের। ২৩ বছরের সেই যুবকের আনন্দঘন যাত্রাই বদলে দিয়েছিলো পুরো পশ্চিমা বিশ্বের ইতিহাস। চিনতে পেরেছেন যুবকটি কে?
আর্নেস্তো চে গ্যাভেরা – সারা পৃথিবী যাকে এক নামে চিনে “চে” নামে।

আনন্দঘন সেই যাত্রাকে সারাজীবন স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। প্রতিদিন ডাইরী লিখতেন। কি ভাবছেন? খুব উত্তেজনাপূর্ণ, রোমাঞ্চকর কাহিনী খুজে পাবেন সেই ডাইরীতে?
ভুল!
সেই ডাইরী জুড়ে ছিলো শুধু কস্ট, ধ্বংস আর অসামঞ্জস্যতায় ভরা।
হাস্যরস যেখানে কম, দুঃখ বেশী।
নাটকীয়তা কম, বাস্তবতা বেশী।
স্বচ্ছলতা কম, দারিদ্রতা বেশী।
প্রতিটি পাতায় উঠে এসেছে ধনী গরিবের পার্থক্য। আর্জেন্টিনা-চিলি-পেরু-ভেনেজুয়েলা ঘুরে ঘুরে তিনি যা দেখেছেন, তা বদলে দিয়েছিলো তার চিন্তা চেতনা। ঘুরিয়ে দিয়েছিলো তার জীবনের মোড়।
চিকিৎসক চে হয়ে গিয়েছিলো “বিপ্লবী চে”।
সমাজ ব্যবস্থার সব অসুখ বিসুখ সারানোর জন্য হাতে তুলে নিয়েছিলো অস্ত্র।

পড়ে দেখতে পারেন, মাত্র ১৬৫ পৃষ্ঠার বই। চলুন চড়ে বসি চে’র সাথে, তার মোটর বাইকের সওয়ারী হয়ে।
কথা দিচ্ছি ঘুরে যাবে আপনার চিন্তা ভাবনার চাকা।
চলুন ঘন্টা খানেক এর জন্য ঘুরে আসি, সেই সময়ের দক্ষিণ আমেরিকা।

বইটি পড়ে কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।

গানটাও পারলে শুনবেন সাথে সাথে।

“তুমি চে’ আছো তাই
আমি পথে হেটে যাই-
হেটে হেটে বহু দূর
বহু দূর যেতে চাই। “